সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ফেনী-১

মাঠে আলাউদ্দিন নাসিম, বদলে গেছে দৃশ্যপট

ফেনী প্রতিনিধি

মাঠে আলাউদ্দিন নাসিম, বদলে গেছে দৃশ্যপট

পাল্টে গেছে ফেনী-১ আসনের নির্বাচনি হিসাব-নিকাশ। পাল্টে গেছে রাজনৈতিক হালচাল। আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ফেনী-১ আসনে নির্বাচনি প্রচার শুরু করার পর বদলে গেছে দৃশ্যপট।

আলাউদ্দিন নাসিম নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করায় তফসিল ঘোষণার আগেই এ আসনে আনন্দ-মুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নাসিমের পক্ষে দেখা দিয়েছে দলীয় ও জন জোয়ার। বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা ছাগলনাইয়ায় গত শুক্রবার আলাউদ্দিন নাসিম হঠাৎ কোনো ঘোষণা ছাড়াই যান। তার আসার খবর শুনে এক ঘণ্টার মধ্যে সেখানে জড়ো হন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এক পর্যায়ে ছাগলনাইয়া জিরো পয়েন্ট এলাকা বিশাল জনসভায় পরিণত হয়।

পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলাকে নিয়ে ফেনী-১ আসন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাসদের শিরিন আখতার। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এ আসন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। জোটের রাজনীতির কারণে এখান থেকে গত দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ আসনের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার। আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নির্বাচনি মাঠে নামায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনটি উপজেলায় এক সপ্তাহের মধ্যে নাসিমের পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ব্যানারে হয়েছে সভা-সমাবেশ। শনিবার ফুলগাজী পাইলট হাই স্কুল মাঠে তাঁর সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। পরশুরাম পৌরসভা, ইউনিয়ন, ফুলগাজী উপজেলায় দ্বিতীয়বারের মতো জনসভা, পথসভা ও একাধিক উঠান বৈঠক করেছেন তিনি।

আলাউদ্দিন নাসিম ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমানে এক  নম্বর সদস্য হলেও তিনি কখনো নির্বাচন করতে আগ্রহ দেখাননি। এ আসনের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ স্থানীয়রা তাঁকে বারবার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করলেও তিনি তা বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন। তৃণমূলের রাজনীতিতে তিনি কখনো নিজেকে সরাসরি জড়াতে চাননি। তবে তিনি নিয়মিত নিজ নির্বাচনী এলাকাসহ ফেনীর বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। ফেনী জেলায় তাঁকে আওয়ামী লীগ পরিবারের অভিভাবক হিসেবেই গণ্য করা হয়।

গত সংসদ নির্বাচন থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ এ আসনে দলীয় মনোনয়ন দাবি করে আসছে। তারা গত নির্বাচনেও অন্য দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। তখন থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের বনিবনা হচ্ছিল না।

স্থানীয়রা জানান, আলাউদ্দিন নাসিমকে এ আসন থেকে নৌকার মাঝি করা হলে কোনো গ্রুপিং থাকবে না। দলমত নির্বিশেষে সবাই তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। তাঁকে নির্বাচিত করার প্রধান কারণ তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এলাকার রাস্তা-ঘাট, পুল কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। যে কারণে এলাকায় তিনি অনেক জনপ্রিয়।

জানতে চাইলে ছাগলনাইয়া পৌরসভার মেয়র ও ছাগলনাইয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা বলেন, এ আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য যারা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন তাদের থেকে অনেক গ্রহণযোগ্য আলাউদ্দিন নাসিম। ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলিম বলেন, আলাউদ্দিন নাসিম নির্বাচনী মাঠে নামায় মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।  উপজেলাজুড়ে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরশুরাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার বলেন, তাঁর জন্য জন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী এবার অন্য সংগঠনের কারও পক্ষে নির্বাচন করবে না। ফেনীর পরশুরামের সন্তান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু বলেন, এ আসনে দলীয় একজন প্রার্থী সময়ের দাবি। আমার নিজের মনোনয়ন চাওয়ার কথা ছিল। নাসিম প্রার্থী হলে আমার আর কিছু বলার নেই।

সর্বশেষ খবর