রাজধানীর দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ আদম আলী মার্কেটে জজ মিয়ার মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করতেন মো. শহিদুল ইসলাম। প্রতিদিন মাংস বিক্রি শেষে নিজ বাড়ি বেরাইদ চলে যেতেন। মাংস বিক্রি শেষে ১২ নভেম্বর রাতে বাকিতে বিক্রি করা মাংসের টাকা সংগ্রহের জন্য বের হন। এতে রাত বেশি হওয়ায় খুন হওয়া কসাই খায়রুল তাকে নিজ দোকান ‘আফসাল গোস্ত’ বিতানে ঘুমাতে বলেন। পরে খায়রুলের সঙ্গে ঘুমাতে যায় শহিদুল। ঘুমানোর একপর্যায়ে শহিদুলকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন খায়রুল। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে দোকানের বাক্সে থাকা মাংস কাটার চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খায়রুলকে খুন করে পালিয়ে যান শহিদুল। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে শহিদুলসহ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। একপর্যায়ে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন শহিদুল। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। তিনি বলেন, গত রবিবার রাতে নিজ দোকান থেকে খায়রুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মঙ্গলবার রাতে ফায়দাবাদ আদম আলী মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে একজন শহিদুল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি, ঘটনার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহিদুলকে বলাৎকারের চেষ্টা চালায় খায়রুল। এ ঘটনায় শহিদুল রেগে গিয়ে দোকানের বাক্সে থাকা মাংস কাটার চাপাতি দিয়ে খায়রুলের মুখে কোপ দেয়। খায়রুল পড়ে যায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য খায়রুলের ডান পাশের ঘাড়ে উপর্যুপরি কোপায় শহিদুল। পরে মরদেহ কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখে এবং চাপাতির রক্ত মুছে বাক্সে রেখে পালিয়ে যান শহিদুল। ওই দিন গরু দিতে আসা কয়েকজনের কাছে আমরা শুনেছি, প্রতিদিন যেখানে খায়রুল একা ঘুমাতেন। ঘটনার দিন সেখানে দুজনকে ঘুমাতে দেখা গেছে। পরে আমরা ধারণা করি, খায়রুলের সঙ্গে ঘুমানো ব্যক্তিই হতে পারে এ ঘটনার মূল আসামি। তবে সেটা যে শহিদুল হবে তা তখনো পরিষ্কার ছিল না। এ হত্যাকান্ডের পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না শহিদুলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তা জানা যাবে।