শিরোনাম
শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাবিতে জমে উঠেছে পিঠা আড্ডা

রায়হান ইসলাম, রাবি

রাবিতে জমে উঠেছে পিঠা আড্ডা

হেমন্তের হিম হিম স্পর্শে শীতের আগমনি বার্তা। মৃদু কুয়াশায় ভেজা মাঠ। এমন স্নিগ্ধ পরিবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) জমে উঠেছে পিঠাপুলির আমেজ। প্রতিদিন বিকাল থেকে ক্যাম্পাসে পড়ে পিঠা খাওয়ার ধুম। সাত রকম ভর্তার সঙ্গে পাঁচ পদের পিঠা দারুণ উপভোগ করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরাও। গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের রোকেয়া হলের বটতলা, পুরাতন শেখ রাসেল মাঠের পাশে, শহীদ হবিবুর রহমান ও সোহরাওয়ার্দী হলের দিকে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু হলেও পিঠা আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে টিএসসির মাঠ। সারিবদ্ধ ১০টি চুলা তৈরি হয় চিতই, ভাপা, কুশলি, পাটিসাপটা ও তেল পিঠা। পাঁচ পদের পিঠার সঙ্গে থাকে সাত রকম ভর্তাবাটা। সাধ্যের মধ্যে দাম থাকায় দারুণ উপভোগ হয়ে উঠেছে এই পিঠা আড্ডা। সন্ধ্যায় মাঠে যেতেই কানে ভেসে এলো শিক্ষার্থীদের খুনসুটির শব্দ। জানা গেল, তারা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মী। গ্রুপে গান-বাজনা শেষে তারা পিঠা খেতে এসেছেন। মাদুরপাতা মাঠে বসে জমিয়ে তুলেছেন আরেক আড্ডা। উদীচীকর্মী হৈমন্তী রায় বলেন, ‘সবাই মিলে বসে পিঠা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়ার অনুভূতিটা দারুণ। গরম গরম পিঠার স্বাদটাও উপভোগ্য।’ ক্যাম্পাসে শীতের পিঠা বাড়ির কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই মাঝেমধ্যেই পিঠা খেতে আসি- যোগ করেন আরেক উদীচীকর্মী নীলাঞ্জনা। এ ছাড়াও দলবদ্ধ হয়ে চুলার পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন পিঠাপ্রেমীরা। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে পিঠা খেতে খেতে বন্ধুদের সঙ্গে মজেছেন আড্ডায়। তাদের হাসিঠাট্টা, খুনসুটি ও গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো মাঠ। ক্যাম্পাসে এই পিঠার মেলা বসিয়েছেন নগরীর বুথপাড়া এলাকার মাসুদ আলী। কিশোর বয়সে ক্যাম্পাসে টোকাই ছিলেন তিনি। তবে যুবক বয়সে জীবিকার তাগিদে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। একদিন উঁচু দালান থেকে পড়ে গেলে মেরুদন্ড ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর এখন চলতে ফিরতে পারেন। সাত বছর আগে স্ত্রী মোর্শেদাকে নিয়ে রোকেয়া হলের বটতলায় পিঠা বিক্রি শুরু করেন তিনি। তবে মাসুদের সঙ্গে এখন তার শ্বশুর, চাচি শাশুড়িসহ ১২ জন কাজ করেন। মাসুদ জানান, প্রতিদিন গড়ে পাঁচ ঘণ্টা পিঠা বিক্রি চলে। এতে ১০/১২ হাজার টাকা বিক্রি হয়। খরচ বাদে যেটুকু থাকে এতে এই কয়েকমাস সংসারের খরচ চলে যায়।

সর্বশেষ খবর