আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনে আগুনে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি আহতদের পুনর্বাসন এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলো। ভয়াবহ ওই অগ্নিকান্ডের ১১ বছর পূর্তিতে গতকাল সকালে পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনের ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। এ ছাড়া পোশাক কারখানাটির ফটকের সামনে নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের স্বজন ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর দেশের পোশাক কারখানার ইতিহাসে একটি ট্র্যাজেডি। মামলায় দীর্ঘসূত্রতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং স্বজনপ্রীতির কারণে ১১ বছরে তাজরীনের এমডি দেলোয়ার হোসেনসহ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি হয়নি। এসব বলে দেয়, সরকারপক্ষের কাছে শ্রমিকের জীবন এবং স্বপ্নের কোনো মূল্য নেই। বাংলাদেশ গার্মেন্টস টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনর কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ১১ বছরেও তাজরীন ফ্যাশনের মালিকসহ দোষীদের শাস্তি, ক্ষতিপূরণ আইনের পরিবর্তন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন হয়নি। তিনি বলেন, তাজরীনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি, ক্ষতিপূরণ আইনের বদল ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন করতে হবে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিন্তপুর এলাকার তাজরীন ফ্যাশন কারখানার সামনে এ কর্মসূচি পালন করে পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্পশ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগ, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। পরে তারা মিছিল নিয়ে ব্যানার হাতে ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তুবা গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ আগুনে ১২১ শ্রমিক নিহত এবং শতাধিক শ্রমিক আহত হন। তখন থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি এবং হতাহত শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৯ মে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাজরীন ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় দেলোয়ার হোসেন ছাড়াও ৩০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছিল। বর্তমানে প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন জামিনে মুক্ত।