সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না : টিটু

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না : টিটু

দেশে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না- এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে সদ্য নিযুক্ত বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, নতুন সরকার গঠনের পর মজুদদারি শক্ত  হাতে নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতরগুলোকে যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, প্রতিযোগিতা কমিশন, ট্যারিফ কমিশন, টিসিবির মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে যখন যাকে দরকার তাকেই মাঠে নামানো হবে।

প্রতিমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের পর গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করে নিজ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন আহসানুল ইসলাম টিটু। বেলা ১১টার দিকে নিজ মন্ত্রণালয়ে আসার পর তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে নিজের ও নির্বাচিত সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। 

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী যে পরিকল্পনা দিলেন : বর্তমান কাঠামো ঢেলে সাজিয়ে একটি স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে; রমজান মাসের প্রথম দিন থেকে শেয়ারবাজারের মতো পণ্যের দাম প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে; আগামী জুনের মধ্যে ভোগ্যপণ্যের কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হবে; পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিত রাখতে অর্থ, বাণিজ্য, কৃষি, খাদ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নিয়ে সমন্বয় টিম গঠন করা হবে; রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আনতে তৈরি পোশাকের মতো পাট ও চামড়া খাতেও প্রণোদনা সুবিধা দেওয়া হবে। এ ছাড়া ২৩টি দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন যে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রয়েছেন, তাদের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি। এ সময় প্রতিমন্ত্রী জানান, একজন ব্যবসায়ী হিসেবে গত ২৫ বছর তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, সেই অভিজ্ঞতা দিয়েই তিনি বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে চান। তিনি বলেন, আগে যাই হয়ে থাকুক না কেন, এখন তাঁর প্রধান কাজ হচ্ছে মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পণ্য উৎপাদন করে না, আমদানিও করে না; মন্ত্রণালয়ের কাজ হবে পণ্য সরবরাহের যে বাধাগুলো আছে তা দূর করা। পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ভোক্তা ও ক্রেতার মধ্যে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী দেখতে চান না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পূর্বসূরিদের মতো বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ার পেছনে ডলারের দাম বৃদ্ধি ও ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ৮৫ টাকার ডলার ১২৫ টাকা হয়েছে। টাকার মান হ্রাস পেয়েছে। পণ্য আমদানিতে শিপিং খরচ বেড়েছে। এসব কারণে আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে এখন থেকে চিনি, ডাল, তেল লবণ যা কিছুই আমদানি করা হোক প্রতিটি পণ্যে প্যাকেটে আমদানি মূল্যের ট্যাগ লাগানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাসের মধ্যে রোজা আসছে। তা নিয়েও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান আহসানুল ইসলাম। তিনি বলেন, চলতি মাস থেকেই টিসিবির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের ১ কোটি মানুষের মধ্যে ৩টি পণ্য সরবরাহ করা হবে। রোজার মাসে আরও ২টি পণ্য বাড়িয়ে ৫টি পণ্য ভর্তুকিমূল্যে বিক্রি করবে টিসিবি। ভোক্তা সহায়তায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে ২০ লাখ স্মার্ট কার্ড করা হয়েছে, আগামী ছয় মাসের ১ কোটি কার্ডের কাজ শেষ হবে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া পিঁয়াজসহ যেসব পণ্য আমদানির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে- সেগুলো আমদানির জন্য ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনার কথা জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর