সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বর্ণিল আয়োজনে সাকরাইন উৎসব

জবি প্রতিনিধি

বর্ণিল আয়োজনে সাকরাইন উৎসব

পৌষের শেষ দিনে সাকরাইন উৎসবে মেতে উঠেছিল পুরান ঢাকাবাসী। বর্ণিল আলোকসজ্জা আর চোখ ধাঁধানো আতশবাজির ঝলকানিতে ভরে উঠেছিল পুরান ঢাকার আকাশ। ছোট-বড় সবাই মিলে মেতে উঠেছিলেন

ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন বা পৌষসংক্রান্তি উৎসবে।

গতকাল সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়ির ছাদ এবং পাড়া-মহল্লা ও অলিগলি ঘুরে সাকরাইন উৎসবের এসব চিত্র দেখা গেছে। বিকালের পরপরই সন্ধ্যায় সব বয়সী মানুষেরা মেতে ওঠেন সাকরাইন উৎসব উদযাপনে। পুরান ঢাকার নারিন্দা, লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, গেন্ডারিয়া, ধূপখোলা মাঠ, ওয়ারী, দয়াগঞ্জ, বাংলাবাজারসহ আশপাশের সব এলাকায় জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে সাকরাইন উৎসব। সাকরাইন উপলক্ষে সকাল থেকেই সাজসাজ রব পড়েছিল পুরান ঢাকার অলি-গলিতে। পুরান ঢাকার প্রতিটি বাসা বাড়ির ছাদ সাজানো হয়েছিল বর্ণিল আলোকসজ্জায়। সারাদিন উচ্চৈঃস্বরে বেজেছে গান। ফুটানো হয়েছে আতশবাজি। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ছিল ঐতিহ্যবাহী আগুনের খেলা। সেই সঙ্গে রয়েছে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হালের ডিজে পার্টির আয়োজন। এ ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে ছিল পিঠা তৈরির ধুম। পরিবারের সব সদস্য নতুন পোশাক পরিধান করে উদযাপন করেছেন সাকরাইন উৎসব। এ ছাড়াও অনেক ছাদে পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্য আয়োজন করা হয় খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। শীতের সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশকে উপেক্ষা করে প্রতিটি বাসাবাড়ির ছাদে সবাই মেতে উঠেছিলেন ঘুড়ি কাটাকাটি খেলায়। বিকাল শেষ হতে না হতে সন্ধ্যার পরপরই বৈচিত্র্যময় আলোকসজ্জার সঙ্গে আকাশে উড়েছে শত শত ফানুস।

পুরান ঢাকার অলিগলি রূপ নিয়েছিল উৎসবের আমেজে। যুবক-যুবতীরা সেজেগুজে বাহারি অলংকার পরিধান করে সহপাঠীদের সঙ্গে ঘুরতে গেছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। নিজেদের মতো সময় কাটানোর জন্য গেছেন বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে। সেই সঙ্গে নতুন ঢাকা থেকেও অনেকেই আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে এসেছেন সাকরাইন উৎসব উদযাপন করতে। স্থানীয়রা বলেন, সাকরাইন উৎসব উপলক্ষে সারাদিন ঘুড়ি উড়ানোর, বাড়িতে বাড়িতে পিঠা উৎসব, ছাদে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি, আগুনের খেলাসহ  ছিল বৈচিত্র্যময় সব আয়োজন। আমাদের বাপদাদারা পালন করছে এখন আমরাও করছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাকরাইন এখন পুরো পুরান ঢাকার সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুড়ি ওড়ার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছি। বিকালের পরেই শুরু হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্ব। রাতে থাকছে আতশবাজি ফোটানো, ফানুস উড়ানোসহ বারবিকিউ পার্টি। গতকাল বিকালে সাকরাইন উৎসব উপলক্ষে রাজধানী পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া ধূপখোলা মাঠে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ঘুড়ি উৎসবে অংশ নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা ২০২১ সাল থেকে সাকরাইনে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন শুরু করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা পুরান ঢাকার সব বয়সী তরুণ, যুবক-যুবতীদের ঘুড়ি উৎসবে উৎসাহী করছি যেন ঢাকার ঐতিহ্য আবারও তরুণ সমাজে জাগ্রত হয়ে ওঠে এর মধ্য দিয়ে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মন্নাফী, ঢাকা-৫ আসনের (এমপি) মশিউর রহমান মোল্লা সজলসহ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরা।

সর্বশেষ খবর