রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

আইসিজের রায়কে ভণ্ডামি বলল ইসরায়েল

প্রতিদিন ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া রায় বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এ রায়কে ‘ভণ্ডামি’ বলে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি ইসরায়েল বলেছে, তারা জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনআরডব্লিউএ) গাজায় আর কার্যক্রম চালাতে দেবে না। এদিকে আইসিজের রায়ের পর ফিলিস্তিনি গেরিলা বাহিনী হামাস তিন নারী বন্দির ভিডিও প্রকাশ করে নতুন বার্তা দিয়েছে। একই সঙ্গে লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ইসরায়েলের নতুন একটি নজরদারি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। সূত্র :    রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি, আলজাজিরা, জেরুজালেম পোস্ট।

একটি খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনআরডব্লিউএ) গাজায় আর কার্যক্রম চালাতে দেবে না ইসরায়েল। গতকাল এক ইসরায়েলি মন্ত্রী এ কথা জানিয়েছেন। ইসরায়েলের দাবি, গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএর বেশ কয়েকজন কর্মী জড়িত ছিলেন। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম এক্সে বলেছেন, আগামীতে ইউএনআরডব্লিউএ যেন আর কাজ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে চায় ইসরায়েল। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সংস্থাটির অন্যান্য প্রধান দাতাদের কাছ থেকে সমর্থন লাভের চেষ্টা করবে তারা। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, তারাও আপাতত ইউএনআরডব্লিউএতে আর কোনো অর্থ সহায়তা দেবে না। এদিকে গাজায় গণহত্যা ইস্যুতে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়কে ভণ্ডামি বলে উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির। তিনি নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত ওই আদালতকে কটাক্ষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘হেগ শ্মাগ (শ্মাক)।’ তিনি আরও লেখেন, ‘হেগের ইহুদিবিদ্বেষী আদালতের রায় প্রমাণ করে- এই আদালত ন্যায়বিচার চায় না, বরং এটি ইহুদি জনগণের ওপর নিপীড়ন সমর্থন করে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এই ধরনের বিপজ্জনক রায় মেনে চলতে পারি না, যা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অস্তিত্বকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। সম্পূর্ণ বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবশ্যই শত্রুকে নির্মূল করতে হবে।’ আরেক খবর অনুযায়ী, জাতিসংঘের আদালতের (বিশ্ব আদালত) রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ভিডিওটিতে তিন নারী জিম্মিকে কথা বলতে দেখা গেছে। শুক্রবার প্রকাশিত সেই ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ৫ মিনিট। ভিডিওর নারীদের তিনজনই বয়সে তরুণী এবং তাদের মধ্যে দুজন সেনাসদস্য এবং বাকি একজন সিভিলিয়ান। তরুণীরা জানিয়েছেন, ১০৭ দিন ধরে বন্দি রয়েছেন তারা। তবে তাদের কবে নাগাদ মুক্তি দেওয়া হবে, এ-সংক্রান্ত কোনো ইঙ্গিত ভিডিওটিতে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, ১৩২ জন জিম্মির মধ্যে ভিডিওর তিন নারীও রয়েছেন।

হিজবুল্লাহর হামলা : লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ইসরায়েলের নতুন একটি নজরদারি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা নতুন বসানো ওই নজরদারি ব্যবস্থার ওপর গোলাবর্ষণ করে তা ধ্বংস করে। লেবাননের আরবি ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল আল-মায়াদিন এ খবর দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সেনারা কিছুদিন আগে দক্ষিণ লেবানন সীমান্তের কাছাকাছি জারিত শহরের একটি আউটপোস্টে এ নজরদারি ব্যবস্থা বসিয়েছিল।

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আগামী সপ্তাহে : গাজায় গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া রায়ের বিষয়ে আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠক করবে। পরিষদের প্রেসিডেন্সি শুক্রবার এ ঘোষণা দেয়।

সর্বশেষ খবর