মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

কিশোরীর নবজাতক সন্তানকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার ধুনটে নবজাতককে ১ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম শাহীন ধুনট সদর ইউনিয়নের বেলকুচি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে এবং ধুনট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বর্তমানে শেরপুরে বসবাস করেন। অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, ধুনট সদর ইউনিয়নের মাটিকোড়া গ্রামের মৃত আশাদুল ইসলামের মেয়ে আয়শা খাতুন বেলকুচি গ্রামে তার নানা মৃত কপিল উদ্দিনের বাড়িতে নানি আছিয়া বেগমের সঙ্গে বসবাস করে আসছেন। এক বছর আগে নওগাঁর নজিপুর এলাকার সোহেল নামে এক যুবকের সঙ্গে আয়শার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আয়শা ও সোহেল ধুনটের বেলকুচি গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন। কিছুদিন পর আয়শাকে বাড়িতে রেখে সোহেল জীবিকার তাগিদে ঢাকায় যায়। এদিকে গত ২৮ নভেম্বর আয়শা খাতুন শেরপুর উপজেলা সদরের মাহবুব ক্লিনিকে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। সন্তানের মুখ দেখার আগেই তার দূরসম্পর্কের নানা রফিকুল ইসলাম শাহীন ১ লাখ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ৩০ হাজার টাকা আয়শার হাতে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আয়শা খাতুন বলেন, প্রতিবেশী শাহীন নানা আমাকে বাড়ি থেকে নিয়ে শেরপুরের মাহবুব ক্লিনিকে সিজার করান। জ্ঞান ফেরার আগেই শাহীন নানা আমার সন্তানকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে টাকা নিয়ে চলে যান। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আমাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে দেন। আমার সন্তানকে অনেকবার দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা দেখায় নাই। আমার সন্তানের ঠিকানা শুধু শাহীন নানাই জানেন। আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে চাই।

এদিকে সম্প্রতি আয়শার সন্তান বিক্রির ঘটনার একটি ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সমাজকর্মী ফৌজিয়া হক বিথি। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। হুমকি দেওয়া হয় শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বিথিকে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ফৌজিয়া হক বিথি বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহীনের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বিথি বলেন, দরিদ্র আয়শা খাতুনকে অর্থের লোভ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে রফিকুল ইসলাম শাহীন তার সন্তানকে বিক্রি করে দেন। আয়শা তার সন্তানকে ফিরে পেতে চায়। তাই তাকে আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় রফিকুল ইসলাম শাহীন উল্টো আমার বিরুদ্ধেই থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে এবং হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হলে পুলিশ সেটি জিডি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, সন্তান বিক্রির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর