শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

উন্নয়ন ভোগান্তি দুই মহাসড়কে

নির্মাণকাজে কচ্ছপ গতি, গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

উন্নয়ন ভোগান্তি দুই মহাসড়কে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়কের মেরামত চলছে ধীরগতিতে। যার কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ অংশসহ বিভিন্ন অংশে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ ভাগ। নির্মাণকাজের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় এবং বিশ্বরোড মোড় থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আখাউড়া পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত আর অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সহসাই দুর্ভোগ কমছে না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওপর দিয়ে চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা এবং কুমিল্লার যাতায়াতকারীদের। বেহাল সড়কে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন এবং লাখ লাখ মানুষ। এ ছাড়া উড়ন্ত ধূলায় মহাসড়কের পাশে বসবাসকারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে সড়কের ২৭ কিলোমিটার অংশ নির্মাণকাজ শেষে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পায়। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতাসহ নানা সংকটে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়ন করছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় ধীরগতিতে চলছে প্রকল্পের কাজ। এতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। কাজে ধীরগতির কারণে কয়েক দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও কমছে না জনদুর্ভোগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রায় ২২ কিলোমিটার অংশে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সেই সঙ্গে যানবাহনের যন্ত্রাংশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়মিত পানি ব্যবহার না করায় নির্মাণ প্রকল্পের উড়ন্ত ধূলার কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কের একপাশে (দুই লেন) পাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বরোড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়কের সাড়ে ৭ কিলোমিটার অংশে দুই লেনের কাজ শেষ। আর এসব সড়কে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ায় কিছুটা হলেও দুর্ভোগ কমেছে। প্রকল্পটি ভারতীয় ঋণ সহায়তা এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন প্রকল্পের উপপ্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বৈশি^ক অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি করোনার সময়ে ভারত থেকে নির্মাণসামগ্রী আমদানি ব্যাহত হওয়ায় নির্মাণকাজে কিছুটা ধীর গতি হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে বর্ধিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

সর্বশেষ খবর