শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ বরখাস্ত

♦ কলেজজীবন থেকেই উগ্র ♦ বাড়িতে অস্ত্রের গোডাউন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ছাত্র আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করা সেই শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে আন্দোলনের প্রথম ধাপ সফল হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। সেইসঙ্গে ওই শিক্ষকের মেডিকেল সনদ বাতিল ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, রায়হান শরীফ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক)। তিনি রামেক ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় অনেক অপকর্ম করেছেন এবং উগ্র মেজাজি ছিলেন। ইন্টার্নশিপ শেষে সিরাজগঞ্জে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষক হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন। তবে উগ্র মেজাজের কারণে শিশু বিভাগের এক চিকিৎসককে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেখানের জন্য চাকরিচ্যুত হন। ব্যক্তিজীবনে এক নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেছিলেন। উগ্রতার কারণে সেই বিয়ে টেকেনি। ২০২১ সালে বিসিএস (বিশেষ বিসিএস) দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন তিনি। ২০২৩ সালে ২২ মার্চ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে কমিউনিটি মেডিসিন লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই ক্লাস নেওয়ার সময় অস্ত্র নিয়ে যেতেন এবং ক্লাসে অস্ত্র রেখে ক্লাস নিতেন ও ছাত্রছাত্রীদের ভয় দেখাতেন। এ ছাড়াও তিনি কলেজ ক্যান্টিনে বাকি খেতেন। টাকা চাইলেই বলতেন পরে দেব। পিস্তল বের করে ক্যান্টিন শ্রমিক-মালিককে হুমকি দিতেন। এমনকি শহরে ছোটখাটো বিষয় নিয়েও পিস্তল দেখিয়ে মুদিদোকানদার ও রিকশাওয়ালাকেও পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখাতেন। শিক্ষকের বাড়ি যেন ছোটখাটো অস্ত্র কারখানা ছিল। পুলিশ তার কাছ থেকে দুটি অবৈধ অস্ত্র ও ৮১ রাউন্ড তাজা গুলিসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করেছে। শিক্ষক শরীফ মাঝেমধ্যে ছাত্রীনিবাসে গিয়ে ছাত্রীদের মাদকদ্রব্য সেবনের আহ্বানসহ নানাভাবে হয়রানি করতেন বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। কলেজ শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলন শুরুর আগেই শিক্ষককে বরখাস্তের আদেশ দেয় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। দুপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আন্দোলন বন্ধ রেখে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানায়। আন্দোলনের প্রথম ধাপ সফল হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সঙ্গে শিক্ষক রায়হান শরীফের মেডিকেল সনদ বাতিল ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে লিফলেট বিতরণসহ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দিয়ে তাদের দাবির সঙ্গে সহমতও প্রকাশ করেছেন তিনি।  

সর্বশেষ খবর