শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

৭০ ঘণ্টা পর নিভল আগুন

এস আলমের চিনির গুদামে আগুন

আজহার মাহমুদ, ইছানগর থেকে ফিরে

প্রায় ৭০ ঘণ্টা পর নিভেছে এস আলম গ্রুপের চিনি কারখানার গুদামের আগুন। তবে তিন দিন ধরে ক্রমাগত পোড়া চিনির তরল বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে যাওয়া বন্ধ হয়নি। এর প্রভাবে নদীতে ভেসে উঠছে নানা প্রজাতির প্রাণী ও সামুদ্রিক মাছ। নদীর পানিতে অ্যাসিডের অস্তিত্ব মিলেছে। ঘটেছে বহুমাত্রিক বিপর্যয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ ১৮টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে আগুন নিভেছে। তবে কিছু জায়গায় এখনো হালকা আগুন আছে। আজকের মধ্যে আগুন পুরোপুরি নিভে যাবে। গুদামে মজুত থাকা ১ লাখ মেট্রিক টন চিনির মধ্যে ৮০ শতাংশ রক্ষা করা গেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে সংস্থাটির দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

গতকাল দুপুরে কারখানাটি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, গুদামের বেশির ভাগ অংশের আগুন নিভে গেলেও কিছু কিছু জায়গায় আগুনের ফুলকি আছে। নিভে যাওয়া অংশের ছোট ছোট স্থানে আবারও আগুন জ্বলতে শুরু করছে। কারখানার সীমানা দেয়ালের বিভিন্ন অংশ ফুটো করে তরল বর্জ্য নদীতে অপসারণ করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পোড়া বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। নদী ও কারখানা পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অফিসের উপ-পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার জানান, নদীর পানিতে অ্যাসিডের অস্তিত্ব থাকায় মাছ ও জলজপ্রাণীর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কর্ণফুলী নদীর পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেবল একটি উপাদানের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে- পানিতে অ্যাসিড রয়েছে। এ অবস্থায় জলজপ্রাণীদের বেঁচে থাকা কঠিন। তাই পানির ওপরের অংশে ভেসে উঠছে। পরীক্ষা পুরোপুরি শেষ করতে পাঁচ দিন সময় লাগবে। নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার আগেও সুগার মিলের বর্জ্য নদীতে ফেলার অভিযোগ ছিল। আর দুর্ঘটনার পর গত তিন দিনে লাখ লাখ লিটার বর্জ্য নদীতে যাচ্ছে। এ দূষণ কর্ণফুলী নদীর ইকোসিস্টেমকে মারাত্মক বিপন্ন করেছে। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা কমে মাছসহ অন্যান্য প্রাণী মরে ভেসে উঠছে। এ ছাড়াও আমরা খালি চোখে দেখতে পাচ্ছি না এরকম আরও বহুমাত্রিক বিপর্যয় ঘটেছে। এস আলম গ্রুপের জি এম আক্তার হাসান বলেন, ফায়ার সার্ভিস যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই সবকিছু হয়েছে। তারপরও গ্রুপের কোনো দায় থাকলে প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর