শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

হিজাব খুলে কেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশ অধ্যক্ষ সাসপেন্ড

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

হিজাব খুলে মুসলিম ছাত্রীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশ দিয়ে বিপাকে পড়েছেন এক শিক্ষা কর্মকর্তা। বিষয়টি সামনে আসতেই অভিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে সাসপেন্ড করেছে গুজরাট শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বুধবার গুজরাটের ভারুচ জেলার অঙ্কলেশ্বর শহরের লায়ন্স নামক একটি বেসরকারি স্কুলে রাজ্য বোর্ডের দশম শ্রেণির গণিত পরীক্ষা শুরুর আগে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব খুলে ক্লাসরুমে প্রবেশ করার জন্য পরীক্ষার পরিদর্শককে (ইনভিজিলেটর) নির্দেশ দেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। বিষয়টি সামনে আসার পরই বৃহস্পতিবার ওই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গুজরাটে। হিজাব খুলে দেওয়া এক ছাত্রীর অভিভাবকের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই ভারুচ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) স্বাতী রাউল বুধবার এই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন। অপসারিত অভিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নাম ইলাবেন সুরাতিয়া, তিনি আবার ওই বেসরকারি স্কুলেরই অধ্যক্ষ। বুধবার ওই স্কুলেই গুজরাট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (GSHSEB) পরীক্ষা চলছিল।

স্বাতী রাউল গণমাধ্যমকে জানান, ‘বুধবার এই ঘটনাটি লায়ন্স স্কুলে সিনিয়র সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা শুরুর আগে ঘটেছিল। যেখানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোরকা সংগ্রহ করতে দেখা যায়।’

তিনি আরও জানান, ‘আমি একজন অভিভাবকের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। যিনি অভিযোগ করেছেন যে বুধবার লায়ন্স স্কুলে পরীক্ষার জন্য উপস্থিত হওয়ার সময় তার কন্যাকে হিজাব খুলতে বলা হয়েছিল। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এর পরেই ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সুপারভাইজারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার ছিল বোর্ডের পরীক্ষার প্রথম দিন। তবে এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

 কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই এ রকম একটি অনভিপ্রেত ঘটনার খবর সামনে আসে। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনোরকম প্রতারণার ঘটনা এড়াতে পরীক্ষার্থীদের মুখের ছবি ভিডিও করে রাখা হচ্ছিল এবং সেই কারণে হিজাব সরাতে বলা হয়। এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। গুজরাটি মাধ্যম স্কুলে পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বৃহস্পতিবার অঙ্কলেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এক ছাত্রীর বাবা জানান, ‘ওই স্কুলের অধ্যক্ষ এবং অন্য কর্মীরা নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে, সেখানে আমার মেয়েও ছিল তাদেরকে হিজাব খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে যেতে বলা হয়। আমার মেয়ে স্কুল থেকে বাড়িতে আসার পরই প্রায় তিন ঘণ্টা কান্নাকাটি করে। প্রায় অন্তত ১২ জন ছাত্রীর সঙ্গে এই রকম ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ নেয়।’ যদিও গুজরাট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (GSHSEB) এক্সাম ডিরেক্টর এমকে রাভাল জানান, পরীক্ষার সময় ছাত্রীদের নির্দিষ্ট কোনো পোশাক পরার গাইডলাইন নেই। ছাত্রীরা যে কোনো মার্জিত পোশাক পরে যেতেই পারেন এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগে ছাত্রীদের মুখের সঙ্গে অ্যাডমিট কার্ডের ছবি মিলিয়ে দেখার অনুমতিও রয়েছে।

সর্বশেষ খবর