শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
অপহরণ জিম্মি দেশবিদেশে

মুক্তিপণে ফেরত পুলিশের দাবি অভিযানের ফল

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড় থেকে অপহরণের শিকার ১০ জন প্রায় ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন। গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং রইক্ষ্যং ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমের পাহাড় থেকে তাদের ফেরত দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীরা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন বলে জানা গেছে।

তাদের পরিবার বলছে, ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে তাদের ছেড়েছে অপহরণকারীরা। তবে পুলিশ বলছে, পুলিশি অভিযানের কারণেই অপহৃতদের ফেরত পাওয়া গেছে। কিন্তু মুক্তিপণের বিষয়টি তারা অবগত নয়। যদিও মুক্তিপণের বিনিময়েই অপহৃত ১০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও রেকর্ডও ছড়িয়ে পড়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে টেকনাফ থানা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ফাঁড়ির ৫০ জন পুলিশ একযোগে টেকনাফের জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযান শুরু করে। পাশাপাশি অভিযানে যোগ দেন র‌্যাব সদস্যরা। অভিযানের এক পর্যায়ে পুরো পাহাড়টি ঘিরে ফেলা হয়। তারপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযানের মুখে অপহৃত ১০ জনকে পাহাড়ে ছেড়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারী চক্রটি। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়। এখন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর অপহরণকারীদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান চলমান রয়েছে। ওসমান গনি বলেন, পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃত ১০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। এখানে মুক্তিপণ কোনো বিষয় নেই। অপহৃতদের পরিবারের সদস্যরা কোনো তথ্য দেয় না। এমনকি একাধিকবার চেষ্টার পরও লিখিত অভিযোগ দিচ্ছে না। স্বজনরা তথ্য না দেওয়ায় পুলিশ তার কাজে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। তবে সবকিছু মাথায় নিয়ে অপহরণকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার হওয়া ১০ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ওসি জানান, কোনো লিখিত অভিযোগ বা স্বজনরা পুলিশকে সরাসরি কোনো তথ্য না দিলেও আটজনকে অপহরণের তথ্য ছিল। এর মধ্যে বুধবার দুপুর ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাংস্থ ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ি এলাকা ছয়জন এবং মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) টেকনাফের হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু আনতে গিয়ে দুজন অপহরণের তথ্য ছিল। কিন্তু অভিযানে উদ্ধার হলো ১০ জন। অপর দুজনকেও বুধবার বিকালে পুটিবুনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এর মধ্যে উনচিপ্রাং এলাকা থেকে ছয়জন এবং পুটিবুনিয়া এলাকা থেকে দুজনকে অপহরণ করা হয়। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন- টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচিপাড়া এলাকার লেদু মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (১৫), বেলালের ছেলে জুনাইদ (১৩), নুরুল আমিনের ছেলে সাইফুল (১৪), শহর আলীর ছেলে ফরিদ (৩৫), নাজির হোছেনের ছেলে সোনা মিয়া (২৪), শহর মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা (৩২)। উনচিপ্রাং এলাকা থেকে ছয়জনকে অপহরণ করা হয়েছিল। আরও রয়েছেন- হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং উত্তর পাড়ার আলী আকবরের ছেলে ছৈয়দ হোসেন ওরফে বাবুল (৩৩), রইক্ষ্যং দক্ষিণ পাড়ার কালা মিয়া ওরফে লম্বা কালুর ছেলে ফজল কাদের (৪৭), টেকনাফের হোয়াইক্যং রোজারঘোনা এলাকার আমির হোসেনের ছেলে অলি আহমদ (৩২) এবং কম্বনিয়া এলাকার ফিরোজের ছেলে নুর মোহাম্মদ (১৭)।

সর্বশেষ খবর