শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

অনেক বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল মিল্টনের : ডিবি প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯০০ লাশ নয়, ১৩৫ লাশ দাফন করেছে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দার। কিন্তু মানুষের সহানুভূতি এবং টাকা পাওয়ার জন্যই লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে ৯০০ লাশ দাফন করা হয়েছে বলে ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে দিত মিল্টন। নিজ মুখে স্বীকার করা ১৩৫টি লাশ কোথায় দাফন করা হয়েছে, সে বিষয়েও কোনো তথ্য দিতে পারেননি মিল্টন সমাদ্দার। অনেক বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল।

গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, মিল্টন কাউকে পরোয়া করত না। অনেক বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। চার দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের এসআই মোহাম্মদ কামাল হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, ৯০০ লাশ দাফন করার ভিডিও মিল্টন মানুষের সহানুভূতি ও টাকার জন্য করেছে। তার কাছে ৯০০ লাশ কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে সেটি জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে সে নিজের মুখে ১৩৫টি লাশ দাফনের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু সেসব লাশের ব্যাপারেও কোনো ধরনের প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। এগুলো আরও তদন্ত করা হবে। অনাথ-অসহায় মানুষের এসব ভিডিও ফেসবুকে দিয়ে সে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আর মানুষজনও তাকে বিশ্বাস করে বিকাশ-নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু আশ্রমে কোনো ডাক্তার সে রাখেনি। আমাদের আরও কিছু তথ্য জানার বাকি আছে। প্রয়োজনে তাকে আবারও রিমান্ডে আনব। সমাজে এ ধরনের কাজ আরও যারা করছেন, তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। আমরা দেখেছি মানুষের কাছ থেকেই কোটি কোটি টাকা এনে নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে দিয়েছে। ডিবি প্রধান হারুন আরও বলেন, মিল্টন কাউকে পরোয়া করত না। কারণ, অনেক বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তাই সে মনে করত তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। যারা মিল্টনের আশ্রমে শিশু ও অসুস্থ মানুষ দিয়ে আসত, পরে তারা মিল্টনের আশ্রমে অসহায় মানুষের খোঁজখবর নিতে গেলে, তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও মারধর করত। তবে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অধিকাংশ অভিযোগই স্বীকার করেছে।

তিনটি মামলার মধ্যে দুটি মামলায় আমরা তাকে রিমান্ডে এনেছিলাম। ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করে লাশ দাফনের বিষয়টিও সে নিজেই স্বীকার করেছে। রিমান্ডে থাকাকালীন সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ গণমাধ্যমে এসেছে, তার অধিকাংশই স্বীকার করেছে।

সর্বশেষ খবর