বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

বাজার ধরতে মার্কিন ও রুশ কোম্পানির দৌড়ঝাঁপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের বাজার ধরতে বিশ্বের দুই প্রভাবশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা একই সঙ্গে ঢাকা সফর করছেন এবং সরকারের নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর বৈঠক করছেন। এরই মধ্যে      মার্কিন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অপরদিকে রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বৈঠক করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও ডিসিসিআইর নেতাদের সঙ্গে। গতকাল বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করে রাশিয়া ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। সকালে রুশ প্রতিনিধি দল বৈঠকের পরপরই দুপুরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মার্কিন কোম্পানিগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ। বাণিজ্যে নজর অ্যামাজন, শেভরন, বোয়িং, মেটার : বাণিজ্য সম্প্রসারণে সরকারের নীতিসহায়তা চেয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। এক্সিলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও সিইও স্টিভেন কবসের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অতুল কশ্যপ, উড়োজাহাজ নির্মাণ কোম্পানি বোয়িং সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট সলীল গুপ্ত, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটার দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি বিষয়ক পরিচালক সেরিম আজিজ ছাড়াও ভিসা, মাস্টারকার্ড, অ্যামাজন, ব্ল্যাকস্টোন, ডানাহার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ক্যাপহিড ডায়াগনস্টিক, শেভরন, কর্টেভা অ্যাগ্রিসায়েন্স, জিই অ্যারোস্পেস, এডলম্যান গ্রুপ, ড্রিংকওয়েল, এইএসবিসি, কোকাকোলা, উবারের মতো নামকরা মার্কিন কোম্পানিগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বৈঠক শেষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামাজন, শেভরন, মেটার মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ দেখিয়েছে। এর আগে এই প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেছে। তারা এ দেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে নীতিসহায়তা চায়।  প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে বর্তমান সরকার উৎসাহ দিচ্ছে। আমাদের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। সেখানে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশি কোম্পানিকে নীতিসহায়তা দিতে লজিস্টিক সাপোর্ট পলিসিও রয়েছে। এ নীতির আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। অ্যামাজন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অ্যামাজন সারা বিশ্বের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে মার্কিন এই কোম্পানিটির আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। তারা তৈরি পোশাক ছাড়াও আরও যেসব খাত রয়েছে, সেসব খাতেও বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে চায়। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে। এরপরও যাতে বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকে, সে লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। নতুন পণ্য নতুন গন্তব্যে রপ্তানির নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে প্রচলিত বাজারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। দেশটি থেকে তুলা আমদানি করে বাংলাদেশে পোশাক তৈরি হয়। আমরা চাই, সেই তুলায় তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে তারা যেন বাজার সুবিধা দেয়।

রাশিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের বৈঠক : এর আগে সকালে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল।  সফররত ১৪ সদস্যের রুশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার ট্রেড কমিশনার ড. আলেক্সান্ডার রায়বাস। বৈঠকে তারা রাশিয়ার কোম্পানিগুলো যাতে সহজেই বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারে, সে বিষয়ে সরকারের সহায়তা চান। বিশেষ করে রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে যেসব, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত বাণিজ্য ও শুল্ক বাধা রয়েছে, সেগুলো দূর করার অনুরোধ জানান তারা। এ ছাড়া রুশ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে কৃষির আধুনিকায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাত বিশেষ করে ‘সাইবার সিকিউরিটি’ ও সেবা খাতেও বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করে। রুশ প্রতিনিধি দলে দেশটির ট্রেড কমিশন, কাস্টমস, রপ্তানি বিষয়ক সরকারি প্রতিনিধি ছাড়াও বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মধ্যে পিজেএসসি এসবার ব্যাংক, প্রোটেল লি. এবং রাসচেম লি.-এর কর্মকর্তারা ছিলেন।

সর্বশেষ খবর