বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকার ১৮ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। রাজধানীর প্রায় ১৫ শতাংশ বাড়িতে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের চামেলীবাগ, রাজারবাগ, বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, শান্তিনগর এলাকা নিয়ে গঠিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এডিস মশার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বর্ষা পূর্ববর্তী জরিপে পাওয়া মশার এ উপস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

গতকাল রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে সংবাদ সম্মেলন করে জরিপের তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান জানান, ‘জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্য অধিদফতর এই জরিপ কার্যক্রম চালায়। অধিদফতরের কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে গঠিত ২১টি দল গত ১৭ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯৯টি ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৫২টি বাড়িতে এ জরিপ পরিচালনা করে। এ সময় ৪৬৩টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা ও পিউপা পাওয়া যায়- যা পরিদর্শন করা মোট বাড়ির ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। হাউস ইনডেক্স ১০ এর বেশি হলে মশার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বিবেচনা করা হয়। সে হিসাবে ১৪ শতাংশের বেশি উপস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষার আগে এটা উদ্বেগজনক।’ এবারের বর্ষা মৌসুম পূর্ববর্তী জরিপে মশার যে উপস্থিতি পাওয়া গেছে তা গত বছরের জরিপের চেয়ে বেশি। জরিপে বলা হয়, লার্ভা পাওয়া মোট বাড়ির মধ্যে ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ বহুতল ভবন, ২১ দশমিক ৬ শতাংশ স্বতন্ত্র ভবন, ২১ দশমিক ৬ শতাংশ নির্মাণাধীন ভবন, ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ সেমিপাকা বাড়ি এবং ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ খালি জায়গা। জরিপ অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৮টি ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডে (৪, ৫২, ৫৪, ১৬, ৩, ৫, ১৫, ১৭ এবং ২৩ নম্বর ) ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ পাওয়া গেছে ২০-এর বেশি। অর্থাৎ ওইসব ওয়ার্ডে এডিস মশার উপস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের চামেলীবাগ, রাজারবাগ, বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, শান্তিনগর এলাকা নিয়ে গঠিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ সবচেয়ে বেশি বা ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ ছাড়া উত্তর সিটি করপোরেশনের শাহ আলীবাগ, টোলারবাগ, পাইকপাড়া ও দক্ষিণ বিশিল এলাকা নিয়ে গঠিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স সবচেয়ে বেশি বা ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। কোনো এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি পাওয়া গেলে তাকে ঝুঁঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ অন্য সময়ের চেয়ে বেশি হতে পারে। এবারের জরিপ করা হয়েছে এপ্রিল মাসে। শুকনো মৌসুমে মশার ঘনত্ব কম থাকে। ২০২৩ সালের জরিপ করা হয় জুন মাসে, বর্ষা মৌসুমের জরিপেই এখনকার চেয়ে কম মশা ছিল। সে হিসাবে মশা নিধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এবার মশা বেশি থাকবে। ডেঙ্গু পরিস্থিতিও আগের চেয়ে খারাপ হবে।’

সর্বশেষ খবর