শিরোনাম
রবিবার, ২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
কী বলছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা

দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ থাকতে হবে

--- সালেহউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ থাকতে হবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা সার্বিকভাবে একটা ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছি। বৈশ্বিক পরিস্থিতি যদি আরও খারাপের দিকে যায়, তাহলে দেশের অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব হবে। আমাদের মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ আছে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ আছে।

বাজেটের মূল লক্ষ্য হবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। রাজনৈতিক সদিচ্ছা, রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ না থাকলে এই স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব হবে না। তখন এটি একটি রুটিন বাজেট হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি শুধুমাত্র মানুষের জীবন-জীবিকাকে প্রভাবিত করে না বরং বিনিয়োগেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দ্বিতীয়ত, সরকারের জ্বালানি নীতি স্পষ্ট নয়। একদিকে জ্বালানিতে ভর্তুকি দিচ্ছি, আবার বলা হচ্ছে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে। তৃতীয়ত, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এর জন্য টাকার ওপর চাপ পড়ছে। এই তিনটি চ্যালেঞ্জকে যদি আমরা এখন মোকাবিলা করতে না পারি, তাহলে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ব্যাহত হবে। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই। আবার অনেকে ভয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রেখে দিচ্ছে। দিন দিন অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। মোটাদাগে এই বিষয়গুলোর ওপর দৃষ্টিপাত করতে হবে বাজেটে। সাবির্কভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মান ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সার্বিকভাবে বিনিয়োগের পরিবেশ ঠিক করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি না করলে একটি রুটিন বাজেট হবে। সাবেক এই গভর্নরের মতে, বাজেটটা ব্যয়-সাশ্রয়ী হতে হবে। অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। যাচাইবাছাই ছাড়া অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। লোক দেখানো মেগাপ্রকল্প করা বাদ দিতে হবে। বিপরীতে অত্যাবশ্যকীয় খাতগুলোতে জ্বালানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইটি খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। এর ফলে ব্যবসা বাড়বে, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত হবে।

সালেহউদ্দিন বলেন, সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাজেট বাস্তবায়ন করা। যে প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয় সেগুলো যথাসময়ে শেষ করা যায় না। সময় বাড়ানোর ফলে বাজেটও বাড়াতে হয়। বাজেট বাস্তবায়নের সামর্থ্য, দক্ষতা, নিষ্ঠা ও সততার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।

সাবেক এই গভর্নরের মতে বাজেটের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। তিনি বলেন, দেশের লোকই তো বিনিয়োগ করছে না। বেশির ভাগ লোক বিনিয়োগ না করে বিদেশে টাকা পাচার করছে। তাহলে বিদেশিরা কেন বিনিয়োগ করবে। এখানে আইনি জটিলতা আছে, আইনশৃঙ্খলার ঘাটতি আছে, পলিসিগুলোতেও সমস্যা আছে। দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। যারা বিনিয়োগ করেছে তারাই তো বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে। নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা লাভের একটা অংশ নিতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সেই লভ্যাংশ দিচ্ছে না। এয়ারলাইনস কোম্পানিগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন, তারা টিকিট বিক্রি করে লাভ নিতে পারছে না। ফলে তারা টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর