বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাতভর বিস্ফোরণের বিকট শব্দ, ভয়ে ঘুমহীন শিশুরা

মিয়ানমারে সংঘাত

কক্সবাজার প্রতিনিধি

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে রাতভর বিমান হামলা ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। থেমে থেমে আসা গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারের মানুষ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। বিশেষ করে ঘুমাতে পারছে না শিশুরা। মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তা বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। রাজ্যটির অনেক এলাকা জান্তার হাতছাড়া হলেও তারা বিমান থেকে হামলা অব্যাহত রেখেছে।

গত রবিবার রাত ১২টার পর থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত কিছুক্ষণ পরপর ভারী গোলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। রাখাইনে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফ সীমান্তের এপারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে আবারও অনুপ্রবেশের ঝুঁকি বেড়েছে।

সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, রাখাইনদের যুদ্ধের কারণে তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। রাতে বিমান হামলা ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। টেকনাফ সীমান্ত এলাকার নাজিরপাড়ার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘ওপারের টানা বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারে আতঙ্কে দিন যাপন করছি। গতকাল রাতে যুদ্ধবিমান ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আমাদের বাড়িঘরের দরজা-জানালা কেঁপে ওঠে। শিশুরা পর্যন্ত ঘুম থেকে চমকে ওঠে।’

টেকনাফ সীমান্ত এলাকার লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যমতে, কিছুদিন বন্ধ থাকলেও কয়েকদিন ধরে হোয়াইক্যং, হ্নীলা, পৌরসভা, সদর, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ শোনা যায়। যা গতকাল পর্যন্ত থেমে থেমে অব্যাহত রয়েছে। শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটের নৌকার মাঝি রফিক উদ্দিন বলেন, ‘রাতে তো আছেই! সকালেও অবিরত বিস্ফোরণ ও গোলার বিকট শব্দ শোনা গেছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে মানুষ সাবধানে চলাচল করছে।’

সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা জানা যায়, মিয়ানমার জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির যুদ্ধে রাখাইনের মংডু শহর ছাড়াও দেশটির বিভিন্ন স্থানে হেলিকপ্টার হামলা হয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ৪ হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশায় সীমান্তের গ্রামে এসে আশ্রয় নিয়েছে। সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘রাতে সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। আমরা বিজিবির সহায়তায় সীমান্তের লোকজনকে জরুরি কাজ ছাড়া অযথা সীমান্তে ঘোরাঘুরি না করতে নিষেধ করেছি।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘এখনো মিয়ানমার সীমান্তে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তে আমরা খোঁজখবর রাখছি।’

সর্বশেষ খবর