বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাই কোর্টে সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদন্ড বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাই কোর্টে সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদন্ড বহাল

চাঁদপুরে পারভীন আক্তার হত্যা মামলায় আলোচিত সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে বিচারিক আদালতে দেওয়া মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রেখেছেন হাই কোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত ডেথ রেফারেন্স ও আপিল নিষ্পত্তি করে গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। তবে অপর দুই আসামিকে দেওয়া ফাঁসির দন্ডের রায় পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় ২০১৮ সালের ৬ মার্চ রসু খাঁসহ তিন আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেন চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) আবদুল মান্নান। অন্য দুই আসামি হলেন- জহিরুল ইসলাম ও মো. ইউনুছ।

পরে মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি হাই কোর্টে (ডেথ রেফারেন্স) পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন। গত ৪ জুলাই এ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শেষে রায়ের জন্য গতকালের দিন ঠিক করেন আদালত। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রসু খাঁ চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের মুন খাঁ ওরফে আবু খাঁর ছেলে, জহিরুল পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সৈয়ালবাড়ির মো. মোস্তাফা এবং ইউনুস একই গ্রামের মৃত মিসির আলীর ছেলে। মৃত পারভীন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের পালতালুক গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী। তার বাবা মৃত কাজল খান। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ জুলাই রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে রসু খাঁ ও অপর আসামিরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্য হাঁসা গ্রামের নির্জন মাঠে পারভীন নামে এক নারীকে ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পারভীনের স্পর্শকাতর অঙ্গে ও দুই পায়ের উরুতে সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ২০টি ক্ষতচিহ্ন ছিল।

পারভীন অজ্ঞাতপরিচয় হওয়ায় তৎকালীন সময়ের ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর কাশেম আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, সদর উপজেলার মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খাঁ ভালোবাসায় পরাস্ত হয়ে এক সময় সিরিয়াল কিলারে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ উপজেলার গাজীপুর বাজার উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর এক এক করে তার লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের চিত্র বেরিয়ে আসে। নিজের মুখে স্বীকার করে ১১ নারী হত্যার কথা। পরে তাকে এবং সহযোগী দুজনকে পারভীন হত্যা মামলায় আসামি করা হয়। আটকের আড়াই মাস আগে পারভীনকে হত্যা করে তারা। টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকান্ড ঘটানোর। রসু খাঁ যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্টস কর্মী।

সর্বশেষ খবর