চট্টগ্রামে প্রতারণার মাধ্যমে আবু বক্কর নামে এক কৃষকের কিডনি অপসারণের অভিযোগে দুই চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান জিনিয়ার আদালতে এ মামলা করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন, ডা. রাজীব হোসেন, তার বাবা চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. রবিউল হোসেন ও তার মা খালেদা বেগম। মামলার বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, আদালত শুনানি শেষে মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী আবু বক্কর কৃষি কাজ ও পশু লালন-পালন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ডা. রাজীবের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় ২০১২ সালে চিটাগাং আই ইনফর্মারি অ্যান্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্স স্টাফ কোয়ার্টারে বাসায় নিয়ে ডা. রবিউলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় সিঙ্গাপুরে ডা. রবিউলের চিকিৎসা করার জন্য একজন অ্যাটেন্টডেন্ট প্রয়োজনের কথা জানিয়ে তাঁদের সঙ্গে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। আবু বক্কর সম্মতি দিলে অভিযুক্তরা পাসপোর্ট ও ভিসাসহ সব কাগজপত্র তৈরি করে ২০১২ সালে ১০ মার্চ ডা. রবিউল হোসেন, তাঁর স্ত্রী খালেদা বেগম, ডা. রাজীব হোসেনসহ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে যান। ডা. রবিউলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ডা. রাজীব মামলার বাদীকে জানান, তাঁর বাবার অবস্থা ভালো নয়। তাঁকে সুস্থ করতে হলে যে কোনো মানুষ থেকে কিছু টিস্যু দিতে হবে। এ সময় টিস্যু দিলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না বলে আশ্বস্ত করে বাদীকে টিস্যু দেওয়ার অনুরোধ করেন ডা. রাজীব।
মানবিক বিবেচনায় টিস্যু দিতে রাজি হলে একই বছরের ৩ এপ্রিল বক্করকে হাসপাতালে ভর্তির পর অপারেশন করা হয়। ৯ এপ্রিল তাকে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ দেওয়া হয়। ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। টিস্যু দিয়ে জীবন বাঁচানোর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তাঁকে আসামিদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান চিটাগাং আই ইনফর্মারি অ্যান্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্সে চাকরি দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ফিজিক্যালি আনফিট দেখিয়ে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর দিনে দিনে বক্করের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। গত ২০২৪ সালের ২১ মে চিকিৎসকের পরামর্শে আলট্রাসনোগ্রাফি করান। রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক জানান, তাঁর ডান কিডনি নেই। চিকিৎসক মতামত দেন, সার্জারির মাধ্যমে তার ডান কিডনি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
