মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূতভাবে
নিহতদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অধিকারের পেজ থেকে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে অধিকারের পোস্টে বলা হয়, ২০১৩ সালে অধিকার নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সেই নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের একটি তথ্যানুসন্ধান মিশন পরিচালনা করে এবং ৬১ জন নিহত উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে আওয়ামী লীগ সরকার অধিকারের তৎকালীন সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান এবং সংগঠনের বর্তমান পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০০৯)-এর ৫৭ ধারায় মামলা করে। অধিকার আরও জানায়, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সালে অধিকার এবং এর নেতাদের ওপর নিপীড়ন, নজরদারি, কর্তৃপক্ষের দ্বারা হয়রানি এবং সরকারপন্থি মিডিয়া দ্বারা নেতিবাচক প্রচারণার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে দমনপীড়ন শুরু করে। এক দশকের বেশি সময় বিচারিক হয়রানির পর ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াৎ রায় ঘোষণা করেন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের একটি সত্য অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আইসিটি আইনের অধীনে আদিলুর রহমান খান এবং এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ দুই বছরের কারাদন্ড দেন। কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩১ দিন বন্দি থাকার পর সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. এমদাদুল হক আজাদ তাদের উভয়ের জামিন মঞ্জুর করলে ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর দুজনই কারাগার থেকে মুক্তি পান। অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারকের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছে।