আবু সাঈদসহ ছাত্র-আন্দোলনে অন্যান্য শহীদকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়েছে। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঊর্মির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামিকে ২৮ নভেম্বর হাজির হতে সমন জারি করেছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খাদেমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আসামি ঊর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুকে লেখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ : নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর জানান- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ঊর্মির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন পীরগঞ্জবাসী। গতকাল পীরগঞ্জ প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাঁর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা তীব্র আন্দোলনে শহীদ হন শত শত ছাত্র-জনতা। এদিকে আবু সাঈদের গ্রাম জাফরপাড়া গ্রামের মানুষ গতকাল সকালে পীরগঞ্জ উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিকালে জাফরপাড়া বাজারে বিক্ষোভ করেন আবু সাঈদের ইউনিয়ন ও জাফরপাড়ার বিক্ষুব্ধ মানুষ। এর আগে সোমবার দুপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।
লালমনিরহাট : জেলা প্রতিনিধি জানান, শহীদ আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী আখ্যা ও গণঅভ্যুত্থানকে কটূক্তি করা ঊর্মিকে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ। গতকাল সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে সংগঠনটি। বক্তারা বলেন, ঊর্মি মূলত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছে। রাষ্ট্রের কর্মচারী হয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হওয়া উচিত। জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে তাকে অবমুক্ত করে পাঠিয়ে দিই। তার ফেসবুক আইডিতে যে লেখা ছিল, তা অত্যন্ত আপত্তিকর।