শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী ব্যাংকিং মেলা

সেবা দিতে গ্রাহকের দরজায় ব্যাংক

আলী রিয়াজ

সেবা দিতে গ্রাহকের দরজায় ব্যাংক

সেবা দিতে এবার গ্রাহকের দরজায় ব্যাংক। গ্রাহকদের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে রাজধানীতে বসেছে ব্যাংকিং মেলা। গতকাল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার দ্বিতীয় দিনে ছিল গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। ব্যাংক কর্মকর্তারা গ্রাহকের বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে ধারণা দেওয়াসহ সহজভাবে ঋণপ্রাপ্তিতে সহায়তা করছেন। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবার বিভিন্ন পণ্য নিয়ে দেশে এই প্রথমবারের মতো মেলার আয়োজন করা হয়। ২৪ নভেম্বর শুরু হওয়া মেলা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। দেশের সব তফসিলি ব্যাংকই অংশ নিয়েছে মেলায়। গতকাল মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যাংকার, সাধারণ গ্রাহক, উদ্যোক্তাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েকশ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এসেছেন। তারা বিভিন্ন ব্যাংকের স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছেন। প্রতিটি স্টলে ব্যাংক কর্মীরা বিভিন্ন প্রযুক্তি সেবার পণ্য সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন। এসব পণ্যের মাধ্যমে আধুনিক ব্যাংকিং সেবা তুলে ধরা হচ্ছে। এসব স্টলে এটিএম কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংক অ্যাকউন্ট খোলার জন্য আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। অনেকেই এটিএম ও ডেবিট কার্ডের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরলে সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান করে দিচ্ছেন। এমনকি ব্যাংকের বিভিন্ন তহবিলের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। ঝামেলা ছাড়াই ঋণ দিতে মেলায় আবেদন করা যায়। ফলে অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আগ্রহী হয়ে মেলায় আসছেন। শুধু ব্যাংক কর্মকর্তারা নন, ব্যাংকের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও উদ্যোক্তারা কথা বলতে পারবেন এই মেলায়। এ জন্য প্রতিদিনই আয়োজন করা হয় ব্যাংক এমডি ও গ্রাহক বৈঠক। এখানে গ্রাহকরা ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারবেন। তুলে ধরতে পারছেন তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও পরামর্শ। এমনই একজন উদ্যোক্তা বগুড়ার মশিউর রহমান। তিনি বগুড়ায় গড়ে তুলেছেন একটি কৃষি খামার। নিজের অর্থায়নে এতদিন এই খামার গড়ে তুললেও কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেননি। তার খামারে অর্থায়ন পেতে ঢাকায় এসেছেন এই মেলায়। মেলার মাধ্যমে ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সহায়তা নিয়েছেন। একটি বেসরকারি ব্যাংক তার আবেদন গ্রহণ করে অর্থায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাৎক্ষণিক এই সেবা পেয়ে তিনি খুবই খুশি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে তিনি বলেন, ব্যাংকিং মেলা আমাদের জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই ভালো একটি উদ্যোগ। আমি বগুড়ায় কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ঘুরলেও কোনো ঋণ পাইনি। চেষ্টা করেও ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। কিন্তু ঢাকায় মেলায় এসে ব্যাংকের এমডির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে কথা দিয়েছেন অর্থায়ন করবেন। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশে এমন আয়োজন করলে আমার মনে হয় ক্ষুদ্র গ্রাহকদের আরও সুবিধা হবে। মেলা উপলক্ষে প্রতিদিনই বিতর্ক প্রতিযো-গিতা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকার বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। মেলা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল বলেন, ব্যাংক গ্রাহকের মাঝে সেতুবন্ধ তৈরি করতে মেলার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। মেলা শুরু হওয়ার পর উদ্যোক্তাদের সাড়া পেয়ে আমরা অভিভূত। সারা দেশ থেকেই ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তারা আসছেন মেলায়। সাধারণ গ্রাহক যারা প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবা নিতে আগ্রহী তারাও আসছেন। সার্বক্ষণিক ব্যাংকাররা সহযোগিতা করছেন।

সর্বশেষ খবর