বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা
শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা

প্রধান আসামি রাজু গ্রেফতার চারজন ধরাছোঁয়ার বাইরে

রাজধানীর শাহআলী এলাকায় ১০ বছরের এক শিশুকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজু (২৫)-কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পর একজনকে গ্রেফতার করা হলেও অন্য চার আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদিকে, ঘটনার পর থেকেই জড়িতদের বাঁচাতে থানা পুলিশ নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। রাজুর গ্রেফতারের বিষয়ে গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত ৩টার দিকে মাদারীপুরের শিবচর থেকে এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে রাজু পুলিশকে জানিয়েছে, শিশু ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে খোকন ও ইসমাইল নামে আরও দুজন জড়িত। রাজুকে রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারেও একাধিক টিম কাজ করছে। গত ৫ জানুয়ারি বিকালে শাহআলী থানার মিরপুরের হাজী রোডের ঝিলপাড়া বস্তিতে ওই শিশু গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। ওই বস্তির মালিক শান্তি বেগমের ছেলে রাজুই এ ঘটনার মূল হোতা। এ ছাড়া রাজুর সঙ্গে ছিল নিহত শিশুটির বান্ধবীর বাবা খোকন, ইসমাইল ও অজ্ঞাত আরও দুই যুবক। শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে খোকনের ঘরে লাশটির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শয়নকক্ষের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে ধর্ষকরা। পরে তারা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। এ জন্য তারা পুলিশকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। পারিবারিক সূত্র মতে, এ ঘটনার পর শিশুটির মা থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অনেক পীড়াপীড়ি এবং সাংবাদিকদের তোপের মুখে শেষ পর্যন্ত শাহআলী থানা পুলিশ মধ্যরাতে মামলা নিতে বাধ্য হয়। তবে মামলা নিলেও এ থেকে যেন অভিযুক্তদের বাঁচানো যায় সে লক্ষ্যে তৎপরতা চালায় পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহআলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে ধর্ষণের কোনো আলামত তারা পাননি। সুরতহাল প্রতিবেদনেও গণধর্ষণের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিল পুলিশ। ঘটনার পর দিন রবিবার দুপুরে শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত করতে এসে সুরতহাল প্রতিবেদন দেখে তা দায়সারা বলে ফেরত দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কাজী গোলাম মোকলেসুর রহমান। কারণ পুলিশের ওই সুরতহালে 'শরীরের জামা-কাপড় কোথায় কীভাবে ছিল, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না' এমন কোনো কথা লেখা ছিল না। পরবর্তীতে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন ঠিক করে দেওয়ার পরে ময়নাতদন্ত শেষ করেন চিকিৎসকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর