শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

রাবি উপাচার্য দফতরে আওয়ামী লীগ নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত

এবার কর্মচারী নিয়োগের দাবিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার হট্টগোল করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) উপাচার্যের দফতরে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষককেও লাঞ্ছিত করা হয়। গতকাল দুপুর ১টার দিকে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপাচার্য দফতরে গিয়ে এ ঘটনা ঘটান। এর আগের দিন রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীও উপাচার্যের দফতরে গিয়ে টেবিল চাপড়ে তাকে শাসিয়ে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর পৌনে ১টার দিকে কোনো ধরনের পূর্বানুমতি ছাড়াই উপাচার্যের দফতরে ঢুকে পড়েন মহানগর আওয়ামী লীগের সম্পাদক ডাবলু সরকার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবদুল মুমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, মতিহার থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীনসহ নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সারওয়ার জাহান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মু. এন্তাজুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক সাদেকুল আরেফিন, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনন্দকুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম বাদল, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান প্রমুখ। জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন জানান, উপাচার্যের কক্ষে ঢুকেই ডাবলু সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময় প্রক্রিয়া মেনে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।

এ কথা শুনেই ডাবলু সরকার সেখানে হট্টগোল শুরু করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্য নেতা-কর্মীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তখন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান থামাতে এলে ডাবলু সরকার তাকে ধাক্কা দেন। এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরাও অন্য শিক্ষকদের মারার জন্য তেড়ে আসেন। তখন সেখানে উপস্থিত অন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তারা তাদের শান্ত করেন। পরে অবিলম্বে দাবি না মানলে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তারা উপাচার্য দফতর থেকে বেরিয়ে যান। এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মেনে সবকিছু হবে এটাই স্বাভাবিক। এখানে উপাচার্যের দফতরে এ ধরনের আচরণ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাটা দুঃখজনক।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, 'আমরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় সামান্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের লাঞ্ছিত করা বা হাতাহাতির ঘটনা ঘটেনি।'

এদিকে ডাবলু সরকার ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরপরই রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানার নেতৃত্বে মিছিল করেছেন নেতা-কর্মীরা। তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ ছাড়া বিকাল ৩টায় তারা রাবির আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের গেটে ডেকে এনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় সভাপতি মিজানুর রহমান রানা গেটে গেটে গিয়ে বক্তব্য দেন। অন্যদিকে পরপর দুই দিন একজন সংসদ সদস্য ও আরেকজন আওয়ামী লীগের নেতার এমন 'ন্যক্কারজনক' আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছে রাবি শিক্ষক সমিতি।

সর্বশেষ খবর