বুধবার, ৮ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

**********

রাজধানীর উত্তরা থেকে তিন মহিলাসহ আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-২ এর একটি দল সোমবার রাতে তুরাগের কামারপাড়ার ৬ নম্বর সড়কের দুই নম্বর ওয়ার্ডের চারতলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে নয় ভিকটিমকে উদ্ধার করে। তাদের তথ্য অনুযায়ী উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে পাঁচ পাচারকারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, শিল্পী আক্তার (২২), সীমা আক্তার মৌসুমী (১৯), রিনা বেগম (৩০), আবদুল লতিফ (৪৫) ও মোহাম্মদ শহিদুল (৪৪)। তাদের কাছ থেকে ১৯৫টি পাসপোর্ট ও আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, এ চক্রটি সৌদি আরবে নারী পাঠানোর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের দালালদের মাধ্যমে নারীদের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকা নিয়ে আসে। এরপর তারা নারীদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেয়। পরে তারা বিভিন্ন দেশে নারীদের পাচার করে। বিদেশে এই নারীরা বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। মুফতি মাহমুদ জানান, তুরাগ এলাকা থেকে নয়জন ভিকটিমকে উদ্ধারের পর উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের আল আতিফ বিডি ফার্ম নামের ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সিতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ম্যানজার আবদুল লতিফ ও অফিস সহকারী শহিদুলসহ বাকীদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাসুদ রানা জানান, উত্তরার অফিস থেকে ভিডিও কনফারেন্সের যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের ধারণা এসব নারীর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদেশে দালালদের কাছ থেকে সিগন্যালের পরই তাদের বিদেশে পাঠানো হয়। এ চক্রটি দুইশর অধিক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। তাদের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলাভিত্তিক দালাল রয়েছে। খুলনায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নুরুল ইসলামকে, ঢাকায় আবুল হোসেন, চট্টগ্রামে এনামুল এবং বগুড়ায় কামরুলকে। তবে চক্রের মূলহোতা শাহিন খন্দকার পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া আবদুল লতিফ সাংবাদিকদের জানান, গ্রামের মেয়েদের উচ্চ বেতনের লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে নিয়ে আসা হয়। এরপর পাসপোর্টসহ কাগজপত্র কোম্পানি জমা নেয়। পরে বিভিন্ন দেশে তাদের পাচার করে দেওয়া হয়। উদ্ধার হওয়া দৌলতুন নেসা জানান, তার বাড়ি বগুড়া। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর দালাল কামরুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। কামরুল বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নেয়।

পরে ভাষা শিক্ষা ও মেডিকেল পরীক্ষার কথা বলে ওই ফ্ল্যাটে রেখে যায়। কামরুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি জানান, প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর