মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হাজত থেকে পালানো সেই পুলিশ কারাগারে

আদালত প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার জজ আদালতের হাজতখানা থেকে পালানো রাজধানীর কাফরুলের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার আসামি পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম পাটোয়ারি গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল দুপুরের দিকে আদালত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, রবিবার আদালতের হাজতখানা থেকে পালানোর ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার আসামি রেজাউল করিম পাটোয়ারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে আদালতসূত্রে জানা গেছে, আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে তার আইনজীবী শাহাদাত হোসেন আদিল তালুকদার জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আলী মাসুদ সেখ জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে রবিবার পুলিশের দুই এসআইসহ তিনজনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। পরে আদালতের হাজতখানায় ঢোকানোর পর সাবেক এসআই মো. রেজাউল করিম পাটোয়ারি (বিপি নম্বর-৭৭০৪১২৮৭১৮) আসামি হিসেবে নিজের পরিচয় গোপন করে পুলিশ পরিচয় ব্যবহার করে প্রহরীদের ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। অন্য আসামিরা হলেন কাফরুল থানার সাবেক এসআই মো. নুরুজ্জামান (৩৫) ও সোর্স বাবু ওরফে রতন ওরফে বাবু মিয়া (৪৮)।

মামলার নথিসূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ গ্রামের মৃত জামাল হকের ছেলে ফারুক হোসেন কামাল রাজধানীর কাফরুলে সাব-কন্ট্রাকের কাজ করতেন। এরই মধ্যে ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আসামি এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স রতন কাফরুলের ভাণ্ডারি স্টিলের দোকান থেকে ফারুক হোসেনকে মামলা আছে বলে কাফরুল থানায় নিয়ে যান। ওই দিন রাত ১১টায় ফারুকের খোঁজ নিতে বাদী থানায় গেলে হাজতের ভিতর থেকে তার ভাইয়ের কান্নার চিৎকার শুনতে পান। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে বাদী ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করলে আসামি এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স রতন ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিতে বলেন। এ ছাড়া টাকা না দিলে ফারুককে মেরে ফেলা হবে বলে জানান আসামিরা।

২১ ফেব্রুয়ারি ফারুককে কাফরুল থানার ৫৭(২)১২ নম্বর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত আসামির শরীরে জখমের চিহ্ন দেখে রিমান্ড আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি কারাগারে ফারুক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১১টায় মারা যান ফারুক। এ ঘটনায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন ফারুকের বোন পারভীন হক। পরে আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। ওই মামলা তদন্ত করে সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মাজহারুল হক আসামিদের বিরুদ্ধে গত ১ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

সর্বশেষ খবর