বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

জিহাদের বাবাকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলওয়ের পানির পাম্পের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলাটি তুলে নিতে পরিবারের ওপর এবার খোদ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ভয় দেখিয়ে জিহাদের বাবাকে একটি স্ট্যাম্পে সই করিয়ে নিয়েছেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হামিদুল হক শামীম।  জিহাদের বাবা নাসির জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মামলার আসামি জাহাঙ্গীরের কথায় তিনি কাউন্সিলর শামীমের অফিসে গিয়েছিলেন।

শামীমই তাকে একটি স্ট্যাম্পে সই করার জন্য বলেছিলেন। এক পর‌্যায়ে প্রাণভয়ে তিনি সই করেন। এর আগে কয়েকজন আসামি তাকে মামলা আপস করলে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর হামিদুল তা অস্বীকার করেন। কিন্তু জিহাদের বাবাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া মামলার আসামি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাউন্সিলর জিহাদের বাবাকে ডেকে নিয়েছেন। ভয়ভীতি বা হয়রানির কোনো কিছু করা হয়নি।

২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে কলোনি এলাকায় গভীর পাইপে পড়ে যায় শিশু জিহাদ। পরের দিন দুপুরে কয়েকজন যুবক চেষ্টা চালিয়ে শিশু জিহাদকে উদ্ধার করে। গণমাধ্যমের কল্যাণে এ ঘটনা  দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়।

ছেলে জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে বাবা নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে ওই পানির পাম্প বসানোর প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসআরের মালিক প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেন। গত বছরের ৭ এপ্রিল এ দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু আরও কয়েকজন আসামির নাম বাদ পড়ায় জিহাদের বাবা অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন। নারাজিতে আবু জাফর, সাইফুল ইসলাম, দীপক বাবু ও নাসির উদ্দিন নামের রেলওয়ের চার কর্মকর্তাকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগপত্র দেওয়ার আবেদন করা হয়। শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনাস্থল ওই পানির পাম্প স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণে এ চারজনেরও অবহেলা ছিল বলে নারাজিতে বলা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলাটি পুনঃতদন্তের দায়িত্ব পায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, জিহাদের বাবাকে থানায় জিডি করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভয়ে জিহাদের বাবা জিডি করতে পারছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরবর্তী তারিখে আদালতে বিষয়টি জানানোরও পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর