সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইউপি নির্বাচন : আওয়ামী লীগ

চট্টগ্রামে তৃণমূলের ৮৩ নেতা ‘টার্গেট’

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ‘টার্গেট’ তৃণমূলের ৮৩ নেতা। মাঠপর্যায় থেকে এই ৮৩ নেতার সমর্থন পেলে তার নাম জেলা কমিটিতে আসবে। আর এই ৮৩ নেতা যদি প্রার্থী মনোনয়নে বিভক্ত হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে প্রার্থী। তাই সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তৃণমূলের এই ৮৩ নেতার সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ৩২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরপরই মনোনয়নপ্রত্যাশী সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যানরা তোড়জোড় শুরু করেছেন। উত্তরের সন্দ্বীপে ১২টি, মিরসরাইয়ে ৯টি ও সীতাকুণ্ডে ৯টি— এই মোট ৩০ ইউপিতে আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বাছাই শুরু করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে তৃণমূলে নির্দেশনা দিয়েছেন উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেতারা। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণা না করায় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এখনো অপেক্ষায় আছেন দক্ষিণ জেলার প্রার্থীরা। ১১ ফেব্রুয়ারি ছয় ধাপের নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে প্রথম ধাপে রাঙ্গুনিয়ার দুটি ইউপিতে নির্বাচন হবে। এর পর থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ধাপে চট্টগ্রামে ইউপি নির্বাচন হবে। জেলার ১৯৬টি ইউপির মধ্যে উত্তর জেলায় রয়েছে ১০১টি ও দক্ষিণ জেলায় ৯৫টি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘বর্তমান চেয়ারম্যান বা নতুন প্রার্থীরা কোনো সময় একটা ফোনও করেননি। আজ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে প্রতিদিনই ফোন করছেন। তবে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকেই সমর্থন দেব। এতে প্রয়োজনে প্রকাশ্যে সমর্থন করতে দ্বিধা করব না।’ এদিকে কেন্দ্র থেকে চিঠি পাওয়ার পরই নির্দেশনা মোতাবেক প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম।

তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তৃণমূলের নেতারাই চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্ধারণ করবেন। আমরা জেলার দুই নেতা প্রার্থী বাছাই মনিটর করছি। ঐকমত্যের ভিত্তিতে না হলে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করে জেলা কমিটিতে পাঠাবেন নেতারা। পরে তালিকা করে ছয়জনের স্বাক্ষর নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হবে।’

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা, থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রে তালিকা পাঠানো হবে। এরপর কেন্দ্রই প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে। তবে মাঠপর্যায়ে কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির ৬৫ জন এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের আওতাধীন ৯ ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ১৮ জন, সব মিলিয়ে ৮৩ জন নেতা এতে স্বাক্ষর করবেন। এতে সুফল না হলে ৮৩ জনের ভোটের বিজয়ীকে একক প্রার্থী মনোনীত করা হবে। ইতিমধ্যে মিরসরাইয়ে একক প্রার্থী নির্ধারণে বর্ধিত সভা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় দলীয়ভাবে একক চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেই জেলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে হবে। একক প্রার্থীর নাম পাঠালে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দেবেন। যদি কোনো ইউনিয়নে একের অধিক প্রার্থীর তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে পৌরসভার মতো ইউপি নির্বাচনেও যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর