রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘটে অচল রমেক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

নিরাপত্তার দাবিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের লাগাতার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে গতকাল রোগীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি বিভাগের চিকিৎসক, রেজিস্ট্রার ও বিভাগীয় প্রধানদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে বলে দাবি করলেও বাস্তবে রোগীরা কোনো চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, মেডিকেল কলেজ চত্বরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডা. মিলন ছাত্রাবাসটির সীমানা প্রাচীর নেই। নেই দিবা ও নৈশ প্রহরী। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় ছাত্রাবাসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে চিকিৎসকদের জিম্মি করে জিনিসপত্র লুটে নেয়। রাতে হাসপাতাল থেকে দায়িত্ব পালন শেষে ছাত্রাবাসে ফেরার পথে চিকিৎসকরা ছিনতাইয়ের শিকার হন। ক্যাম্পাসে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, ছাত্রাবাসের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, দিবা ও নৈশ প্রহরী নিয়োগের দাবি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে একাধিকবার ধর্মঘট পালন করেও কোনো ফল হয়নি। ১-৭ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে দায়িত্ব পালন শেষে ছাত্রাবাসে ফেরার পথে সাতজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসব দাবিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টা থেকে লাগাতার ধর্মঘটে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

গতকাল সকালে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন করে পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেন ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক।

এদিকে বিষয়টি সুরাহার লক্ষ্যে বেলা ১১টায় পরিচালকের কক্ষে জরুরি বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতা, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্য চিকিৎসক এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি বাস্তবায়নে আশ্বাস দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মাহমুদুর রহমান রিফাত বলেন, এর আগেও একাধিকবার আশ্বাস দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এবার দাবি বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক কাজে যোগ দেবেন না।

গতকাল বেলা ২টায় নিওরো মেডিসিন বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামের আজিজুল হক তার ভাইকে ভর্তি করান শুক্রবার সকালে। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক আসেনি। সকালে একজন চিকিৎসক এসে রোগীর অবস্থা জিজ্ঞেস করে চলে যান। বিকাল পর্যন্ত তাকে আর খুঁজে পাইনি’।

১৫ নম্বর ওয়ার্ডের রোগী আক্কাস আলী বলেন, ‘তিন দিন আগোত আব্বাক ভর্তি করাচি। থাকি থাকি শ্বাসকষ্ট বাড়ি যায়। দুই দিন ধরি কোনো ডাক্তর আইসে না। আইজকার দিন দেখি, ডাক্তর না আইলে কাইল ক্লিনিকোত নিয়া যামো’।

রোগীদের অভিযোগ নাকচ করে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আ স ম বরকতুল্লাহ বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক না থাকলেও আরও অনেক চিকিৎসক আছে। তারাই পালাক্রমে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এসব দাবি পূরণে আমার করার কিছুই নেই।

 

সর্বশেষ খবর