সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

রিজার্ভ চুরির ঘটনা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাজেট ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতেও পড়েছে বলে মনে করে কমিটি। এদিকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছে অর্থবিভাগ। গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বাজেট ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গাফিলতি ছিল বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। যা তিনি গতকালের বৈঠকে বলেছেন। এক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ ও ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রিজাল ব্যাংকই বেশি দায়ী। যদিও তারা দায় নিচ্ছে না। তবে খোয়া যাওয়া অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক, রিজাল ব্যাংক, ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক একসঙ্গে কাজ করছে। চুরির অর্থের পুরোটা ফেরত না আসার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে যে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থাকে। সূত্র জানায়, অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ সভায় বর্তমান অর্থনৈতিক চিত্রের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন। এতে বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দেন। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য তৃণমূল পর্যায়ে এনবিআরকে আরও দ্রুত এবং শক্তিশালী ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নের হার সন্তোষজনক নয় বলে মত দেয় অর্থবিভাগ। বছর শেষে বার্ষিক বাজেট ঘাটতিকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। পাশাপাশি আগামী বছরও বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখা হবে বলে অবহিত করেন অর্থসচিব। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, পরিকল্পনা কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মুদ্রা ও মুদ্রার বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠক হয়। সূত্র জানায়, আর্থিক খাতের অস্থিরতা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে সরকার। একদিকে রাজস্ব আদায়ে খরা, এডিপির বাস্তবায়নে শ্লথ গতি, বৈশ্বিক শ্রমবাজারে অস্থিরতা। সেই সঙ্গে সামগ্রিক অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে আরেক নতুন আপদ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চুরির ঘটনা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাকের ডগায় বসে হ্যাকাররা রিজার্ভের অর্থ হাতিয়ে নিল। এ নিয়ে অর্থনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন করে অস্থিরতা। সভায় এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে নতুন বছরের বাজেটের আকার নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বাজেটের আকার ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখা হতে পারে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। নতুন বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াতে পারে ৯০ থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার মতো। তবে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার লক্ষ্য সামনে রেখে মানব সম্পদ উন্নয়ন, কারিগরি প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ ছয়টি খাতকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আগামী বাজেটে।

সর্বশেষ খবর