বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় হট্টগোল হাতাহাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় চরম হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে তাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিল। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সহসভাপতি ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার আবু আহমেদ মান্নাফির সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবু আহমেদ মান্নাফির একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। গুলিস্তানের দলীয় কার্যালয়ে গতকাল দুপুরে ‘৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস’-এর কর্মসূচি ঠিক করতে বর্ধিত সভায় আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।  সভায় মান্নাফি তার বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, তৃণমূলের কর্মীরা সিনিয়র নেতাদের সম্মান দেয় না। এদের দিয়ে আওয়ামী লীগের কখনোই কোনো সাফল্য আসবে না। এ সময় শাহে আলম মুরাদের সমর্থকরা মান্নাফিকে সাঈদ খোকনের দালাল-ষড়যন্ত্রকারী বলে স্লোগান দেন। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শাহে আলম মুরাদ এবং আবু আহমেদ মান্নাফির সমর্থকরা। তারা কার্যালয়ের ভিতরে ভাঙচুরও চালায়। কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাদের শান্ত হতে বারবার অনুরোধ জানান। কিন্তু কেউ ভ্রুক্ষেপ করেননি। এ বিষয়ে আবু আহমেদ মান্নাফি জানিয়েছেন, যেদিন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধন করা হয়েছিল, সেদিন শাহে আলম মুরাদের সমর্থকরা আমার পাঞ্জাবি টেনে ছিঁড়ে ফেলেছিল। ওই ঘটনার জেরেই আজকের এই পরিস্থিতি। এখনকার কর্মীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ নেতাদের জন্য কোনো সম্মানবোধ নেই। তাদের মধ্যে কেবল আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করার চিন্তা কাজ করে। কেউই দলকে নিজেদের মধ্যে ধারণ করে না। তবে শাহে আলম মুরাদ বলেন, ঘটনা ঘটেছে সত্য। দলকে জনগণের কাছে হেয় করতে বহিরাগতরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

মান্নাফি গংরা পরিকল্পিতভাবে বর্ধিত সভায় বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে চেয়েছিল। যা হয়েছে তা পার্টির সিনিয়র নেতারা দেখেছেন। তারাই এর বিচার করবেন। তিনি বলেন, যারা উগ্র আচরণ করেছে, তারা হয়তো ভুলে গেছে যে, এটা আওয়ামী লীগ। এখানে আবেগ নয়, কাজের মূল্য আগে।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের একটি সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং মেয়র সাঈদ খোকনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। মূলত মহানগরের ওয়ার্ড ও থানা কমিটি নিয়েই তাদের দ্বন্দ্ব। শাহে আলম মুরাদ কমিটিতে তার নিজের অনুসারীদের স্থান দিতে চান। অন্যদিকে, মেয়র সাঈদ খোকন তার অনুসারীদের স্থান দিতে চান। সর্বশেষ তাদের দ্বন্দ্বের প্রকাশ ঘটে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধনের দিন। এদিনও শাহে আলম মুরাদের অনুসারী এবং মেয়র সাঈদ খোকনের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আবু আহমেদ মান্নাফি সাঈদ খোকনের অনুসারী বলে জানা গেছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, আলহাজ আবুল বাসার, নুরুল আমিন রুহুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী, আবদুল হক সবুজ, ডা. দিলীপ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, কাজী মোর্শেদ কামাল। পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আক্তার হোসেন ও সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মামুন রশিদ শুভ্র।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর