বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জনগণ বিকল্প প্রধান রাজনৈতিক শক্তির উত্থান দেখতে চায়

—বদরুদ্দোজা চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, জনগণ দুই দলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তারা বিকল্প প্রধান রাজনৈতিক শক্তির উত্থান দেখতে চায়। আজ বহুদলীয় উদারতন্ত্র বিপদগ্রস্ত। বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে; গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের হলরুমে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন প্রমুখ। অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘যারা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী তারাই বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলবে। জনগণ যা চায়, আমরাও তা চাই।

 জনগণ বিনা ভোটের সরকার আর দেখতে চায় না। বিনা ভোটের এই সংসদই আবার সংবিধান সংশোধন করেছে। আজকে দেশের মানুষ যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারছে না। দেশে হত্যা, গুম, রাহাজানি, লুটপাট, দলবাজি ও ধর্ষণ বেড়েছে। যে সরকার মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষা করতে পারে না, সেটি গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না।’

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের ওপর ভরসা রেখে লাভ নেই। তারা নিজেরাই বলে, তারা সরকারের হুকুম মতো চলবে। বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যদি আপনারা সেনাবাহিনী পাঠাতে পারেন, তাহলে দেশের নির্বাচনে শান্তি বজায় রাখতে কেন সেনা মোতায়েন করা হবে না? শান্তিতে নির্বাচন হলে কারচুপি করা যাবে না এ জন্য?’

রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানো শুধু দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সম্ভব নয়। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের দরকার। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীকে চীন, রাশিয়া ও ভারত সফর করতে হবে। মানুষ আজ অস্থির। চীন যেমন ৩০ বছর আগের অবস্থায় নেই, রাশিয়া যেমন ৪০ বছর আগের অবস্থায় নেই, তেমনি আজকের বাংলাদেশকে জনগণ আর আগের মতো দেখতে চায় না।

আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। অত্যন্ত ভয়াবহ। এ রকম অবস্থায় ৪৫ বছর আগে জেএসডির আত্মপ্রকাশ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে যাদের অবদান নেই, তারাই বার বার ক্ষমতা দখল করে দুঃশাসন চালাচ্ছে। ৫ জানুয়ারির মতো আবার নির্বাচন হলে চরম সংকট সৃষ্টি হবে। এ সংকট মোকাবিলার শক্তি এই সরকারের নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, খুন, গুম, চাঁদাবাজি, দলবাজি ও ধর্ষণে দেশ আজ জাহান্নামে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না। অবশ্যই তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দলের বাইরে চলার কোনো সুযোগ নেই। যাদের দ্বারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগকৃত, তিনি তাদেরই খুশি করার চেষ্টা করছেন। তিনি জিয়াকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক বলে পণ্ডিতি দেখাতে চাইছেন। তিনি বলেন, এই সরকার ও সংসদ অবৈধ। সংবিধানে নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়ার জন্য জনগণের প্রত্যক্ষ সমর্থনের কথা বলা আছে। যখন ১৫৩ জন এমপিই বিনা ভোটে নির্বাচিত হন, তখন তাকে অবৈধ বলার অপেক্ষা রাখে না। আগামীতে এ সরকার ইতিহাসের পাতায় অবৈধ বিবেচিত হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই। এই স্লোগান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে তরুণ যুবকরা অসীম সাহসের পরিচয় দিয়েছিল। একই স্লোগানের প্রয়োজন ছিল ২০১৪, ’১৫ ও ’১৬ সালে। এখন বাংলাদেশে সোনার দামে চাল আর পিয়াজ বিক্রি হয়। সরকার মানুষকে গরু-ছাগল মনে করে। সরকার জনগণকে যেমন খুশি তেমনভাবে চালাতে চাইছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর