রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় লিগ্যাল এইড সমস্যা সমাধান চ্যালেঞ্জিং

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় লিগ্যাল এইড সমস্যার সমাধান করা খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। রাষ্ট্র আইন করেছে কাকে কাকে লিগ্যাল এইড দেবে। এ নিয়ে একটি বইও আছে। এ বইয়ের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। তবে এর বাইরে গিয়েও আইনজীবী ও অন্যদের সহায়তা নিয়ে কাজ করতে হয়। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গতকাল ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’-এর উদ্যোগে আয়োজিত নির্যাতনের শিকার নারীদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় আইন সহায়তা নিশ্চিতকরণবিষয়ক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘লিগ্যাল এইড দেওয়ার বিষয়ে আপনারা যে সমস্যার কথা বলেছেন তা যদি সুপারিশ আকারে তৈরি করে সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তাহলে আমার মনে হয় এর সমাধান করতে পারব। এ সমস্যাগুলোতে আমরাও (সুপ্রিম এইড লিগ্যাল কমিটি) ভুক্তভোগী। আলোচনায় ওয়ান স্টপ সার্ভিসের বিষয়টি বার বার উঠে এসেছে। এটি বাস্তবায়নে আমার মনে হয় আইন সংশোধন করতে হবে। বিষয়টি সরকারের উপলব্ধিতে আনতে হবে। লিগ্যাল এইড কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং দ্রুত সব জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। এখানে যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে আরও সাব-অর্ডিনেট জাজদের যুক্ত করা প্রয়োজন। পারিবারিক সহিংসতার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত না গিয়ে এডিআর ও কাউন্সেলিং করতে হবে। এজন্য এনজিওগুলোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তোলা সম্ভব। লিগ্যাল এইড কমিটিকে আরও ক্ষমতা দিতে হবে, শক্তিশালী করতে হবে। সেই সঙ্গে আইনের দুর্বল দিকগুলো কীভাবে সংশোধন করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি এখানে অনেক সমস্যার কথা শুনেছি। কিন্তু আমার মনে হয় সমস্যাগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে বসে যেখানে সমস্যা হচ্ছে তার সমাধান করা দরকার। লিগ্যাল এইড কমিটিকে শক্তিশালী করতে এর এখতিয়ার বৃদ্ধি করতে পারি। আরও মনিটরিং বৃদ্ধি করতে পারি। তবেই মেডিকেল রিপোর্ট, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, ডিএনএ রিপোর্ট নিয়ে নানা সমস্যা দূর হবে। একই সঙ্গে গ্রামীণ আদালতব্যবস্থাকে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড কমিটিতে যুক্ত করা, অফিসার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন এবং কাঠামোগত উন্নতির মাধ্যমে লিগ্যাল এইড দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দূর হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘লিগ্যাল এইড কার্যক্রম পরিচালনার সময় দেখেছি তাদের পরামর্শকের অভাব। এ ছাড়া পারিবারিক আদালতে মামলা পরিচালনা নিয়েও অনেক জটিলতা দেখা যায়। এসব সমস্যা নিরসনে সবার সচেতন হওয়া দরকার।’

অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ অতিথি পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (পিআইবি) ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল বরজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘এখানে এসে শুনলাম নারী নির্যাতনের অনেক মামলা হয়েছে, অনেক হয়নি। অনেকে পুলিশের গাফিলতির কথা বলেছেন, এটা থাকবেই। তবে এখনো যে মামলাগুলো হয়নি তার প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

আমরাই পারি জোটের জাতীয় সমন্বয়কারী জিনাত আরা হকের সঞ্চালনা ও চেয়ারপারসন সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আমরাই পারি জোটের কো-চেয়ার এম বি আখতার।

 

 

সর্বশেষ খবর