সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলা একাডেমির ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

গতকাল ছিল বাংলা একাডেমির ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সমাধি ও সাহিত্যবিশারদ আবদুল করিমের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বক্তৃতানুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করল বাংলা একাডেমি।

সকালে ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ আয়োজন। এরপর একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সমাধি এবং আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলা একাডেমি।

বিকালে একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা ভাষা এবং বাংলা একাডেমি’ শীর্ষক একক বক্তৃতানুষ্ঠান।

এতে একক বক্তৃতা করেন লেখক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ। একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

একক বক্তৃতায় গোলাম মুরশিদ বলেন, ‘বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ৬০ বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে। যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এ প্রতিষ্ঠানটির যে লক্ষ্য ছিল তার অনেকটাই এখন প্রসারিত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলা ভাষা এখন একটা স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রভাষা এবং সরকারি কাজকর্ম ও শিক্ষার বাহন হওয়ায় বাংলা একাডেমির দায়িত্ব এবং কার্যক্রমের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে। 

সভাপতির বক্তব্যে ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলা একাডেমি ৬২ বছরে তার প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য ও অঙ্গীকার থেকে ভিন্ন এবং বৃহৎ পরিসরে অনেক কিছুই করেছে। একাডেমির প্রতি জনমানুষের প্রত্যাশা অনেক, কিন্তু সব জনপ্রত্যাশা একাডেমির পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, অধ্যাপক শফি আহমেদ, নূরজাহান বোস, আজিজুর রহমান আজিজ, শেখ হাফিজুর রহমান, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ, সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত, অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা, অধ্যাপক মহুয়া মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদ্য প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা-পরবর্তী সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লাইসা আহমদ লিসা এবং কমলিকা চক্রবর্তী।

শেষ হলো ‘সার্ক হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও সার্ক নৃত্য উত্সব’: সার্কভুক্ত পাঁচটি দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, হস্তশিল্প প্রদর্শনী এবং সেমিনারের মধ্য দিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে শেষ হলো চার দিনের ‘সার্ক হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও সার্ক নৃত্য উত্সব’।

গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে সমাপনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন সার্ক কালচারাল সেন্টারের পরিচালক ওয়াসান্থে কোতওয়েল্লা। এর আগে বিকালে একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অরুণ তালুকদারের পরিচালনায় শাহ আবদুল করিমের গান ও ঐতিহ্যবাহী ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। 

সর্বশেষ খবর