সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
পুলিশের সংবাদ সম্মেলন

ফাদার ওয়াল্টার অপহৃত হননি আত্মগোপন করেছিলেন

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ও সেন্ট লুইস উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াল্টার উইলিয়াম রোজারিও (৪২) অপহৃত হননি, স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন নাটোরের পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ওয়াল্টার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েই আত্মগোপন করেছিলেন। সিলেটে আটক হওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে তাকে নাটোরে নিয়ে আসা হয়। তাকে কেউ অপহরণ করেনি। এমনকি তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির বিষয়টিও সঠিক নয়। গতকাল তাকে নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক খোরশেদ আলম তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

 

পুলিশ জানায়, ২৭ নভেম্বর বিকালে তিনি স্বেচ্ছায় তার সেলফোনটি অফ করে মোটরসাইকেল চালিয়ে একাই বনপাড়া থেকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক হয়ে ঢাকার দিকে যান। বনপাড়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তার মোটরসাইকেল চালানোর ছবি পাওয়া গেছে। পরে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরে গিয়ে হোটেলে রাত যাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর সেতুর টোল প্লাজার সিসি ক্যামেরায় তাকে টোল দিতেও দেখা গেছে। পরের দিন তিনি মোটরসাইকেলে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে যান। সেখানে তার মোটরসাইকেলটি ফেলে রেখে তিনি অবকাশ নামে একটি আবাসিক হোটেলে রাত যাপন করেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ মোটরসাইকেলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে। পরের দিন তিনি বাসে করে সিলেট শহরে যান। সেখানে হোটেলে অবস্থান করার পর তিনি শুক্রবার দুপুরের পর দক্ষিণ সুরমা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তার বড় ভাইকে ফোন করেন। এ সময় নাটোর জেলা পুলিশ মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পুলিশের সিলেট সাউথের উপকমিশনার বাসুদেব বণিককে জানান। পরে তিনি সেখান থেকে ফাদারকে উদ্ধার করেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টারের একটি দল তাকে সিলেট থেকে ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ ছাড়া নাটোর পুলিশও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনি অপহৃত হননি, স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছিলেন।

তবে কোন ঘটনায় ফাদার ওয়াল্টার মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং কেন তিনি আবার আত্মপ্রকাশ করলেন তা জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘তা এ পর্যায়ে বলা যাচ্ছে না।’ আত্মগোপন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বেকায়দায় ফেলানোর দায়ে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার ছাড়াও বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আবদুল হাই ও বড়াইগ্রাম থানার ওসি শাহরিয়ার খানসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

সর্বশেষ খবর