বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
উন্নয়নশীল দেশ

প্রধানমন্ত্রীকে আজ সংবর্ধনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই ঐতিহাসিক সাফল্য উদ্‌যাপন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আজ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ৯টায় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর নয়টি পয়েন্ট থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রাগুলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকাল ৩টায় পৌঁছাবে। এরপর সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় শুরু হবে লেজার শো। জানা গেছে, উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি জাতিসংঘ বাংলাদেশকে জানায় গত ১৭ মার্চ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশ মিশনকে সেদিন ওই স্বীকৃতিপত্র হস্তান্তর করা হয়। ওই স্বীকৃতিপত্র মঙ্গলবার দেশে পৌঁছায়। আনুষ্ঠানিকভাবে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তা হস্তান্তর করা হবে।

 আজ এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। ১৯৭৫ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে তুলে এনেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর ৩৭ বছর পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশের তকমা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে নাম লেখাতে পেরেছে বাংলাদেশ। যদিও এজন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তবে জাতিসংঘের ওই স্বীকৃতির আনন্দকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই এই আয়োজন। অনুষ্ঠানে সরকারের মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, ১৪ দলের নেতারা ছাড়াও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকবেন।

নয় পয়েন্টে শোভাযাত্রা : দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এই সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে। অনুষ্ঠানে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণের জন্য গতকাল একটি রোডম্যাপ দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে যারা এই সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন, তাদের এই রোডম্যাপ মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে র‌্যালি এলাকা এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত নয়টি পয়েন্ট দিয়ে ৫৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ জনগণ ব্যানার, ফেস্টুনসহ র‌্যালি নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকবেন। শোভাযাত্রার কারণে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং এর চারপাশে বিভিন্ন রাস্তায় সাধারণ যানবাহন চলাচলে যানজট সৃষ্টি হতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকে শাহবাগ, কাকরাইল মসজিদ, নাইটিংগেল, ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখাঁরপুল, বকশীবাজার, পলাশী, নীলক্ষেত এলাকা দিয়ে র‌্যালি এলাকায় গাড়ি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাইভারশন থাকবে। এ অবস্থায় সর্বসাধারণকে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে এসব এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি। একইসঙ্গে নিরাপত্তার স্বার্থে র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারী ব্যাক প্যাক, হ্যান্ডব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, সিগারেট লাইটার বহন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্টেডিয়ামে ঢোকার রুট নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সবাই দুপুর ২টার পর থেকেই সচিবালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সরকারি অফিস থেকে গাড়ি করে বা পায়ে হেঁটে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সমবেতস্থলে জমায়েত হবেন। বিকাল ৪টায় নির্দিষ্ট রুট দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আনন্দ র‌্যালি স্টেডিয়ামে ঢুকবে।

সমবেত হওয়ার নির্ধারিত স্থান ও র‌্যালি ঢোকার রুট বাংলা একাডেমি ও সংলগ্ন এলাকা : বাংলা একাডেমি ও সংলগ্ন এলাকায় সমবেত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সেতু বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়। তারা বাংলা একাডেমি-দোয়েল চত্বর-আবদুল গনি রোড-জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট দিয়ে প্রবেশ করবে।

শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস্য ভবন : শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস্য ভবনসংলগ্ন এলাকায় সমবেত হয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সদস্যরা শিল্পকলা একাডেমি-মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব-পল্টন-বায়তুল মোকাররম-বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর গেট (মশাল গেট) দিয়ে ঢুকবেন।

শিশু একাডেমি ও দোয়েল চত্বর : মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়। তারা শিশু একাডেমি-আবদুল গনি রোড-জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট দিয়ে ঢুকবেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটশন : স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব-পল্টন হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর গেট (মশাল গেট) দিয়ে প্রবেশ করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেশিয়াম মাঠ ও সংলগ্ন এলাকায় : মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর ও সংস্থাগুলো। তারা দোয়েল চত্বর-আবদুল গনি রোড-জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট দিয়ে ঢুকবেন।

নগর ভবন : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবন-গোলাপশাহ মাজার-গুলিস্তান মোড়- রাজউক মোড় হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর : বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক শাপলা চত্বর-দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব গেট দিয়ে র‌্যালি নিয়ে প্রবেশ করবেন।

রমনা পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব-পল্টন-বায়তুল মোকাররম হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর গেট (মশাল গেট) দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকবেন।

শিল্প ভবন চত্বর : শিল্প মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা শিল্প ভবন-বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন।

সর্বশেষ খবর