মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিজিটাল আইন প্রয়োগে প্রেস কাউন্সিলকে মাধ্যম চায় বিএফইউজে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রেস কাউন্সিলে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ চায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। গতকাল সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করে বিএফইউজের নেতারা এই দাবি জানান। আইনমন্ত্রী এই দাবিকে যৌক্তিক হিসেবে অভিহিত করেছেন। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া এখন জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুক, কোষাধ্যক্ষ মধুসূদন মণ্ডল ও সদস্য সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সম্পাদক পরিষদ এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা যৌক্তিক। তিনি বলেন, তবে কিছু কিছু ধারার বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বক্তব্য শুনলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হবে এবং ধারাগুলো সংশোধনের ব্যাপারে যেসব প্রস্তাবনা এসেছে সেগুলোরও হয়তোবা কিছু সংশোধন বা পরিমার্জন বা পরিবর্ধন হবে। তাই এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সংসদীয় কমিটিতে এ নিয়ে আলোচনা করা হলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।

বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে সংবাদপত্র ও বাকস্বাধীনতার বিষয়ে যে কথা বলা আছে তা বর্তমান সরকার অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদপত্র ও বাকস্বাধীনতা হরণের বিষয়ে কোনো কিছু থাকলে তা দূর করার জন্য যে যে প্রচেষ্টা করা দরকার সরকার তা করবে।

বৈঠকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে মনজুরুল আহসান বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেই ধারাগুলো সংশোধনের জন্য আমরা যেমন দাবি জানিয়েছি, এর পাশাপাশি আমরা বলেছি আইনটি সংসদে পাস হওয়ার পর এটি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে একটি প্রাতিষ্ঠানিক সেফটিনেট সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের জন্য থাকা উচিত।’

এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবনা হচ্ছে- এ আইন গণমাধ্যম কর্মী বা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে হলে প্রাথমিকভাবে প্রেস কাউন্সিলে যাবে। প্রেস কাউন্সিলে একটা ছোট কমিটি থাকবে- যে কমিটিতে সম্পাদক পরিষদ থাকবে, যে কমিটিতে সাংবাদিক ইউনিয়ন থাকবে, যে কমিটিতে এমপি ও সরকারের প্রতিনিধি থাকবেন। তারা প্রাথমিকভাবে যাচাই করে দেখবেন আইনটি সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায় কিনা।’

বিএফইউজের সভাপতি বলেন, ‘অন্তত প্রেস কাউন্সিলকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হলে প্রেস কাউন্সিলও শক্তিশালী হবে, আমরাও একজন পুলিশ কর্মকর্তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে চাই না। আমরা মনে করি, আমাদের প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রেস কাউন্সিল সেক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলছিলাম, বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের উদ্বেগের কথা জানাচ্ছিলাম। আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের বলা হয়েছিল কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকলে তা যদি আমরা তাদের কাছে জমা দেই তাহলে তা সংসদীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে তারা বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।’

সর্বশেষ খবর