সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

স্বামীর পরকীয়ার বলি হলেন কলি এজাহার পাল্টে ফেলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকায় পুলিশ সদস্য মো. মিজানুর রহমান জাবেদের বিরুদ্ধে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার কলিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় লাশ নিয়ে নোয়াখালী জেলা শহরে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নিহতের স্বজনরা। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে নিহতের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও স্থানীয় লোকজন অংশগ্রহণ করেন। এর আগে শনিবার রাত ১১টায় চট্টগ্রাম থেকে লাশ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী সদরের কাদির হানিফে আসে। এ সময় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, পুলিশ সদস্য জাবেদ ও নিহত কলি দুজনই নোয়াখালীর বাসিন্দা। জাবেদ সদর উপজেলার বিনোদপুরের ও কলি কাদির হানিফের বাসিন্দা। ২০১৪ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়েসন্তান রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিয়ের দুই-আড়াই বছর পর থেকে জাবেদ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এর পর থেকে কলিকে প্রায় সময় তিনি মারধর করতেন। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিক বৈঠকও হয়েছে। স্বামীর পরকীয়া ও ইয়াবাসহ অবৈধ উপার্জনের বিষয়ে স্ত্রী নিষেধ করলে বিভিন্ন সময় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এর জের ধরে শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের হালিশহরের বাসায় জাবেদ ও তার বন্ধু বাদশা মিলে কলিকে নির্যাতন করে হত্যা করেন। পরে আত্মহত্যা ও সড়ক দুর্ঘটনা বলে প্রচার করেন জাবেদ। মানববন্ধনে স্বজনরা কলি হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এ সময় তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জাবেদকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কলিকে খুন করার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে এসআই জাবেদ এবং স্থানীয় থানা পুলিশ।  এমনকি মামলার এজাহার পাল্টে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এসআই জাবেদ চট্টগ্রাম রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) এসআই পদে কর্মরত।

নিহত কলির বাবার অভিযোগ, স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় ২৫ মার্চ পরিকল্পিতভাবে কলিকে হত্যা করেন স্বামী জাবেদ ও তার সহযোগীরা। কলির শরীরের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু জাবেদ ও হালিশহর থানা পুলিশ ষড়যন্ত্র করে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। থানায় হত্যাকান্ডের অভিযোগে এজাহার দায়ের করা হলেও গভীর রাত পর্যন্ত তাদের থানায় বসিয়ে রেখে পাল্টে দেওয়া হয় এজাহার। হত্যা মামলাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ।

সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘অভিযোগ পাল্টে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের কাজ কেউ করে থাকলে অবশ্যই শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্য বলে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। দোষী হলে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর