মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুয়াকাটায় রাসমেলায় মানুষের ঢল

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

কুয়াকাটায় রাসমেলায় মানুষের ঢল

কুয়াকাটায় সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তিন দিনব্যাপী রাস উৎসবের আজ উষালগ্নে পুণ্যস্নান। গত রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে সতেরো জোড়া রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা স্থাপনের মধ্য দিয়ে রাসপূজার অধিবাস শুরু হয়। এ সময় ভাগবতগীতা পাঠ, আরতি, শাঁখ, উলু-শঙ্খধ্বনি এবং নামকীর্তনে মুখরিত হয়ে উঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধা-কৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রাসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। পঞ্জিকা মতে সোমবার বিকাল ৪টা ২৩ মিনিটে শুরু হয়েছে পূর্ণিমা। থাকবে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ১৯ মিনিট পর্যন্ত। দুই শ বছর ধরে রাস পূর্ণিমার তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্রতীরে হিন্দু সম্প্রদায় রাসমেলা ও স্নানোৎসব করে আসছে। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও পূর্ণিমার এ তিথিতে উষালগ্নে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপমোচন ও পুণ্য লাভের আশায় গঙ্গাস্নান করবে আগত পুণ্যর্থীরা। ইতোমধ্যেই কুয়াকাটায় পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। দর্শনার্থী, পুণ্যার্থী এবং ভক্তদের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাধু-সন্ন্যাসী, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীর ভিড় বাড়ছে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এ বছর রাস উৎসবে ব্যাপক লোকের সমাগম ঘটবে এমনটাই জানিয়েছেন রাস উৎসব আয়োজকরা। রাস উৎসবে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে এ বছর মাঠে থাকবে আনসার, ভিডিপি, পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।  কুয়াকাটা রাসপূজা ও রাসমেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন মণ্ডল জানিয়েছেন, রবিবার মধ্য রাতে অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে রাস উৎসব। সোমবার সন্ধ্যায় কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধা-কৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম মন্দির প্রাঙ্গণে রাসপূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নামকীর্তন, ভাগবতগীতা পাঠ ও আরতি। আজ উষালগ্ন থেকে রাস পূর্ণিমা লগ্ন অনুযায়ী সাগর সৈকত কুয়াকাটার বিচে পাপমোচন ও পুণ্য লাভের আশায় নামবে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের ঢল। একই দিন সকালে সি-বিচে অনেকেই আবার ভিন্ন ভিন্ন মানত করা পূজা দিবেন পুরোহিত এনে। তিনি আরও জানান, করোনা-পরবর্তী এবং পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এবারের রাস উৎসবে ব্যাপক পুণ্যার্থীর আগমন ঘটবে। এ জন্য কুয়াকাটা সৈকত সংলগ্ন মন্দিরের পক্ষ হতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ঐতিহ্যবাহী ধর্মানুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা উদ্যোগ ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাতভর ভাগবতগীতা পাঠ ও নামকীর্তন শুনে প্রভাতে গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে পূর্ণতা অর্জন করার বিশ্বাসে কুয়াকাটায় শামিল হন পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা।

সর্বশেষ খবর