রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফেসবুকে প্রশ্নফাঁসের বিজ্ঞাপন ইঞ্জিনিয়ারসহ গ্রেফতার ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিজ্ঞাপন দিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- আবদুল আহাদ ওরফে রাফিন খান, স্বাগতম চন্দ্র ওরফে মো. বাবুল মিয়া, সাব্বির আহমেদ, মইনুদ্দিন ও বাসুদেব চন্দ্র রায়। গত মঙ্গল ও বুধবার জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রশ্নফাঁস এবং অনলাইন জুয়ার কাজে ব্যবহৃত সাতটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, ভুয়া প্রশ্নপত্রের বিভিন্ন সেট, ফেসবুক পেজে প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত চ্যাটিং হিস্ট্রি জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া স্বাগতম চন্দ্র ওরফে মো. বাবুল মিয়া রংপুরের একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইলেকট্রনিক বিষয়ে পড়াশোনা করা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। গ্রেফতার এড়াতে সে ফেসবুকে মো. বাবুল মিয়াসহ একডজন ছদ্মনাম ব্যবহার করত।

গ্রেফতার এড়াতে আবদুল আহাদ অনলাইনে নিজেকে রাফিন খান নামে পরিচয় দিত। সে সরকারি বাংলা কলেজের অনার্সের ছাত্র। সাব্বির আহমেদ কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পাস করা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। জামালপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাস করে সে অনলাইন জুয়ার একজন সাব এজেন্ট হিসেবে কাজ করত। মইনুদ্দিন নারায়ণগঞ্জ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পাস করা বেকার এবং অনলাইন জুয়াড়ি। বাসুদেব চন্দ্র রায় ঠাকুরগাঁয়ের একজন বেকার যুবক। ২০২১ সাল থেকে প্রশ্নপত্রের বিভিন্ন মডেল এবং সাজেশন একাধিক ফেসবুক পেজে সংযুক্ত করে শতভাগ নিশ্চয়তায় আসল প্রশ্নপত্র সরবরাহের নামে তারা প্রতারণা করে আসছিল। তারা চলমান এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ এর প্রশ্নপত্র ফাঁস করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর দারুস সালাম ও বাড্ডা থানায় মামলা হয়েছে।

গ্রেফতার পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জ্ঞিাসাবাদ চলছে। ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করলেও অনলাইনে তারা একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কানেক্টেড এবং সুবিধাভোগী। অর্ধডজন ফেসবুক পেজে প্রশ্নপত্র সরবরাহ বা বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করত। এদের ফেসবুক পেজ থেকে তথ্য নেওয়ার জন্য প্রথমে ৭০০ টাকা দিয়ে সদস্য হতে হতো।

পরে পরীক্ষার আগের রাতে প্রতি পরীক্ষার প্রশ্নের জন্য ৫০০ টাকা অগ্রিম প্রদানের মাধ্যমে মূল প্রশ্নপত্র পাওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হতো। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। ইঞ্জিনিয়ার স্বাগতম রায় বাংলাদেশে অনলাইন জুয়াড়িদের জুয়া খেলার আবশ্যিক উপকরণ বিভিন্ন ক্রিপটোকারেন্সির একজন মাস্টার এজেন্ট। জামালপুরের সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির আহমেদ ও ক্রিপটোকারেন্সির অন্যতম সাব এজেন্ট। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর, জেলা, উপজেলা এবং গ্রামে বসবাসকারী অনলাইন জুয়াড়ি, অনলাইন মাদক ব্যবসায়ী বা ভোক্তা এবং অনলাইনে পর্নোগ্রাফির ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীরা ক্রিপটোকারেন্সির মাস্টার এজেন্ট স্বাগতম চন্দ্র এবং সাব এজেন্ট সাব্বির আহমেদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।

সর্বশেষ খবর