বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

আয়ানের মৃত্যু তদন্তে নতুন কমিটি দিলেন হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার পর পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে নতুন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২০ মার্চ দিন রেখেছেন আদালত।

এর আগে আদালতের আদেশ অনুসারে শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানবিষয়ক স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালত বলেন, নতুন করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। তারা তদন্ত করবে ৩০ দিনের মধ্যে। যে তদন্ত (চার সদস্যবিশিষ্ট) হয়েছে, তা আমাদের কাছে মনঃপুত হয়নি। প্রতিবেদনের আধেয় ও সুপারিশের মধ্যে অসংগতি আছে। কীভাবে অ্যানেসথেসিয়া দিয়েছে, কীভাবে ঘটনা ঘটেছে ও কারা দায়ী এ বিষয়গুলোর কিছু আসেনি। এরপর পাঁচ সদস্যের নাম উল্লেখ করে আদেশ দেওয়া হয়। নতুন তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্য হলেন- শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাকসুদুল আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শশাঙ্ক কুমার মণ্ডল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) সহকারী অধ্যাপক সাথী দস্তিদার ও ঢাকা শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক আমিনুর রশীদ। আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ ও ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ শুনানিতে অংশ নেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ। ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত) হিসেবে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির উপস্থিত ছিলেন।

‘লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরল না আয়ান : খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু’ শিরোনামে ৮ জানুয়ারি একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ ৯ জানুয়ারি হাই কোর্টে রিট করেন। পরে রিটে আবেদনকারী হিসেবে যুক্ত হন শিশুটির বাবা শামীম আহমেদ। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি হাই কোর্টের একই বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন কতগুলো হাসপাতাল রয়েছে, তার তালিকা আদালতে দাখিল করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২৯ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেদিন শুনানিতে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ‘এটি ম্যানিপুলেট রিপোর্ট’ উল্লেখ করে অধিক তদন্তের আরজি জানান। এরপর চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনের অসঙ্গতি ১৮ ফেব্রুয়ারি লিখিত আকারে দাখিল করে রিট আবেদনকারী। সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন হাসপাতালের তথ্যাদি সেদিন আদালতে তুলে ধরে রাষ্ট্রপক্ষ। ১৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি নিয়ে আদালত গতকাল আদেশের জন্য দিন রাখেন।

সর্বশেষ খবর