২৭ নভেম্বর : থাক, আজ থেকে ব্যায়াম শুরু না করলেও চলবে। ১ তারিখ থেকে করব। নতুন মাসের শুরু।
১ ডিসেম্বর : আজ শুরু করার কথা ছিল। থাক। আচ্ছা! জানুয়ারি থেকে শুরু করব। নতুন একটা বছর। জীবনটাকে নতুন করে শুরু করলাম, খারাপ কী! ওকে, আগামী মাস অর্থাৎ আগামী বছর থেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতা শুরু। ডিসিশন ফাইনাল।
১ জানুয়ারি : ৩০ মিনিট হাঁটলাম। বাহ! ভালো লাগছে। বিষয়টা সবাইকে জানানো দরকার।
ফেসবুক স্ট্যাটাস : জীবনটা একটা ছকে আনা শুরু করলাম। আজ থেকে সবকিছু নিয়ম মেনে করব। হাঁটাহাঁটি চলবে খাওয়া-দাওয়াও কন্ট্রোলে। কবি বলেছেন স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
ফোনে পুরনো বন্ধুকে : আরে, হাবিব, কী অবস্থা? আরে মিয়া, ভালো থাকবা ক্যামনে? শরীরটার দিকে নজর দেও। এভাবে আর কত? একটু দৌড়াও, হাঁটাহাঁটি কর, খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল কর। আর শোনো, আমি তো আজ থেকে দৌড়ানো শুরু করে দিছি। খুব ফ্রেশ লাগতেছে, বুঝছ?
২ জানুয়ারি : ত্রিশ মিনিট হাঁটলাম। দুইটা আটার রুটি আর তেল ছাড়া ভাজি, বাহ ভালো লাগছে। জীবনটা সুখের। মনে হচ্ছে ওজন অনেকখানি কমে গেছে। দেখি আজকে ওজনটা মাপতে হবে।
৩ জানুয়ারি : ওজন মেপেছিলাম। কমেনি।
তবে কমবে।
১০ জানুয়ারি : বন্ধু সাইফুলের বিয়ে। যাওয়াটা কি ঠিক হবে? গেলেই তো তেল-চর্বি খেয়ে আগের জায়গায় চলে আসব। আচ্ছা যাই না হয়। খাব কম। জাস্ট একটু দই। কন্ট্রোল তো সব নিজের কাছে।
খেতে বসে—
আচ্ছা একটু ভাত নিই। খারাপ না। একটু গরু নেওয়া যায়। বাহ এটাও খারাপ না। আরেকটু কি নেব?
আরে ধুর, একদিনই তো। একদিন খেলে কিচ্ছু হয় না। ‘ভাই, মাংসের বাটিটা এদিকে একটু ঠ্যালা দেন।’
১১ জানুয়ারি : নাহ! গতকাল এত খাওয়াটা ঠিক হয়নি। আজকে পাঁচ মিনিট বেশি হাঁটতে হবে।
বিকালবেলা : একটা সমুচা কি খাব? এগুলোতে তো খুব তেল। থাক, অর্ধেকটা খাই।
২০ জানুয়ারি : নাহ! আজকে হাঁটা হলো না। সকালে ঘুম ভাঙে নাই। এত শীতে সকালের মধ্যে উঠা যায় নাকি?
কাল থেকে মিস করা যাবে না।
২১ জানুয়ারি : আজকেও মিস। এভাবে কি হবে?
বিকালবেলা : বন্ধুদের আড্ডায় গরম শিঙ্গাড়া, খাওয়াটা কি ঠিক হবে? খাই, শীত কাটবে।
২২ জানুয়ারি : আজকেও উঠতে পারলাম না। দুঃখজনক।
২৯ জানুয়ারি : আজকেও দৌড়ানো হলো না। তার ওপর খেয়েছি পেট ভরে ভাত।
অস্বস্তি লাগছে।
৩১ জানুয়ারি : ধুর, এত স্বাস্থ্য সচেতনতার কোনো মানেই নাই। দুই দিনের জীবন। এত দৌড়াদৌড়ি করে কী হবে। এসব বাদ। আজকেই পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভরপেট খেয়ে আসব। সচেতনতার গুল্লি মারি।