হিমু মিয়া মেসে একাই থাকে। রান্নাবান্নার গুরুদায়িত্বটাও সে নিজেই নিয়েছে। বাজারে গিয়ে হিমু বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। এত দাম দিয়ে পিয়াজ কেনা হিমুর ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর। যে হিমু জুতা কেনার ভয়ে খালি পায়ে হাঁটে সে কিনা এত দাম দিয়ে পিয়াজ কিনবে? না না, তা হবে না। এ কদিন মাজেদা খালার বাসায় কাটিয়ে দেওয়া যাবে। মাজেদা খালা দরজা খুলেই হিমুকে দেখে হাসি দিল।
: হিমু এই সাতসকালে কোন কুবুদ্ধি নিয়ে বাসায় আসলি?
: আহারে দরদ রে। আসছোস ভালো কথা বিকালের আগেই এখান থেকে চলে যাবি।
হিমুর মন খারাপ হয়ে যায়।
মাজেদা খালা ডাল রান্না করছে তাতে কোনো পিয়াজের চিহ্ন নেই। ডিমে পিয়াজের পরিবর্তে আলু কুচিকুচি করে দিয়েছে।
: খালা পিয়াজ কই? কোনো তরকারিতেই দেখি পিয়াজ নেই।
: নেই কে বলছে? সব তরকারিতেই হালকা পিয়াজের ফ্লেভার দিয়েছি।
হিমু বহু কষ্টে একটু আধটু পিয়াজ খুঁজে পেয়েছে। দুপুরে সবাই খেয়ে ঘুমাচ্ছে। বিকালেই হিমুকে চলে যেতে হবে। সে আস্তে আস্তে রান্নাঘরে গেল। এরপর চুপিসারে কয়েকটা পিয়াজ হলুদ পাঞ্জাবির পকেটে ঢুকিয়ে নিল। বিকালেই হিমু বাসার পথ ধরলো।
পিয়াজগুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে হিমু। এ কয়টা পিয়াজ দিয়ে তাকে পুরো মাস কাটাতে হবে। কিন্তু পচে গেলে তো সারা মাস রাখা যাবে না। কি করা যায় ভাবতে লাগল। কোনো গতি না পেয়ে মন খারাপ হলো। হঠাৎ মনে হলো, আরে... পিয়াজে তো ফরমালিন দেওয়া যেতে পারে তাহলে আর পচার ভয় নেই। এগুলো যে সোনার হরিণ। এগুলোর একটু যত্ন নিতেই হবে।
►লেখা : তারেকুর রহমান
মিরপুর, ঢাকা