সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

হিম শীতল পরীক্ষা

আফরীন সুমু

হিম শীতল পরীক্ষা

এক দিন হুট করেই রহিম বাসায় চলে এলো। ওকে আমরা বেশ সুখী বলেই জানতাম। সেই রহিমকে ওর বউ বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। সে নাকি ভালোবাসার পরীক্ষায় ফেল করেছে। আমরা ওকে চেপে ধরলাম। ঝামেলা কোথায়? জানতে হবে তো! অনেক জোরাজুরির পরে মুখ খুলল। যা শুনলাম তার সারমর্ম এরকম।

শীত তাকে মহা সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। শীতকালটায় তাই সে যতটা সম্ভব পানির ছোঁয়া বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করে। সকালে ঠাণ্ডা পানিতে হাত-মুখ ধুতে আবদুর রহিমের ভীষণ অসুবিধা। বউ অত ভোরে ঘুম থেকে ওঠে না। তাই রহিম কয়েক দিন ব্রাশ না করেই অফিসে গিয়েছে। খাবার খেয়ে ঠাণ্ডা পানিতে হাত ধোয়ার ভয়ে টিস্যুতে মুছে নিয়েছে এবং বড়জোর দশ কি এগারো দিন হলো সে গোসল করে না। এতেই বউ রেগে টং। অনেক চেঁচামেচি, ঝগড়াঝাটি হলো।  রহিম নীরব থেকেছে। শেষে ভালোবাসার দোহাই দিয়ে বউ বলেছে, ঠিকঠাক ব্রাশ করে, সকাল সকাল গোসল করে অফিসে যেতে হবে। এবং প্রতিবার খাবার আগে ও পরে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে। রহিমের কাছে এগুলো জীবন দিয়ে দেওয়ার চেয়েও কঠিন মনে হলো। উপায়ান্তর না পেয়ে রহিম বেতনের লুকানো অঙ্কটাও বউয়ের কাছে ফাঁস করে দিল। লাভ হলো না। তাজমহলের বিনিময়েও বউ এর একটিতেও ছাড় দিতে নারাজ।

যাই হোক আমাদের একখানে রহিমের ভালোই কাটছিল। সে হয়তো ভেবে রেখেছে শীতকালটা এখানেই কাটিয়ে দেবে। গ্রীষ্মের শুরুতে গোসল করে ঘরে ফিরলেই হবে। কিন্তু রহিমের শেষ রক্ষা হয়নি। এক দিন ওর বউ এক বালতি কনকনে ঠাণ্ডা পানি নিয়ে আমাদের এখানে এসে হাজির। আমরা কেউ ওকে বাঁচাতে এগিয়ে যাইনি। ভালোবাসার পরীক্ষায় ও সেদিন জোর করে পাস করে গিয়েছিল।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর