সোমবার, ৪ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্বকাপের পূর্বাভাস

ইকবাল খন্দকার

বিশ্বকাপের পূর্বাভাস

আইডিয়া ও ডায়ালগ : তানভীর আহমেদ

আমি ব্রাজিল সাপোর্ট করি বলে আমার বউ কী বলে জানেন? আমি নাকি ব্রাজিলের সুন্দরী মেয়েদের দেখে ব্রাজিল সাপোর্ট করছি...

বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হতে এখনো অনেক বাকি— না, এটা বলা যাবে না। বললে চাকরি থাকবে না। কারণ, আয়োজনটা মোটেই দূরে নয়। বলা যায় দরজায় কড়া নাড়ছে। আপনার বাসায় যদি কড়ার পরিবর্তে কলিংবেল থাকে, তাহলে বলতে পারেন, দরজায় কলিংবেল বাজাচ্ছে। এ অবস্থায় খেলা নিয়ে মাঠের বাইরে ব্যাপক যুদ্ধ চলবে, কোথাও কোথাও যুদ্ধের গরম বাতাস বইবে, এটাই তো স্বাভাবিক। আমার এক বড়ভাই বললেন, খেলা এখনো শুরু হয়নি, তাতেই এই অবস্থা, কী আর বলব। জানিস, মনটার মধ্যে খুব দুঃখ, খুব দুঃখ। খেলার কারণে বাবা-ছেলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি অবাক হয়ে বললাম, বাবা-ছেলের মধ্যে দূরত্ব মানে! আপনি এক দল সাপোর্ট করেন, আপনার ছেলে আরেক দল সাপোর্ট করে, বিষয়টা এমন নাকি? বড়ভাই বললেন, আরে না। হয়েছে কী, আমার ছেলেটা আগে আমার সঙ্গে ঘুমাত। কিন্তু সে ঘুমের মধ্যে ফুটবলে লাথি দিতে গিয়ে এত জোরে পা ছোড়ে, আমার পক্ষে খাটে অবস্থান করা দুষ্কর হয়ে যায়। এই তো গত রাতেও সে ঘুমের মধ্যে লাথি মেরে আমাকে খাট থেকে ফেলে দিল। আমি মাজায় প্রচণ্ড ব্যথা পেলাম। সিদ্ধান্ত নিয়েছি যতদিন খেলার আবহ থাকবে, ততদিন ওকে আর আমার খাটে ঘুমাতে দেব না। এই যে বাবা-ছেলের বিচ্ছেদ... আমি বড়ভাইকে কথা শেষ করার সুযোগ না দিয়ে বাজারের দিকে রওনা হতেই পেয়ে গেলাম আমার এক প্রতিবেশীকে। তিনি পাশের বিল্ডিংয়ে থাকেন। আমাকে দেখেই তিনি বলতে লাগলেন, শেষ পর্যন্ত এই অবস্থা হবে, এটা আমার কল্পনায়ও ছিল না। আরে বাপুরে, আমি তো ব্রাজিল সাপোর্ট করতেই পারি। পারি না বলেন? আমি বললাম, যে কেউ যে কোনো দল সাপোর্ট করতে পারে। এটা তার অধিকার। প্রতিবেশী বললেন, ভাইরে, অধিকার ফলাতে গিয়ে এখন বউয়ের খুন্তির দৌড়ানি খেলাম। আমি ব্রাজিল সাপোর্ট করি বলে আমার বউ কী বলে জানেন? আমি নাকি ব্রাজিলের সুন্দরী মেয়েদের দেখে ব্রাজিল সাপোর্ট করছি। ব্যস, বাসা থেকে বের করে দিল। যতক্ষণ না ব্রাজিলের পরিবর্তে হন্ডুরাসকে সাপোর্ট করছি, ততক্ষণ নাকি বাসার গেটের কাছেও যেতে দেবে না। আমি বললাম, দরকার কী বাসার গেটের কাছে যাওয়ার। আপনি বরং বাসার পেছন দিকের পাইপ বেয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশী আমার কথায় মনোক্ষুণ্ন হয়ে একটা ‘স্যাড’ এক্সপ্রেশন দিয়ে চলে গেলেন। এর একটু পরেই আমার খুব প্রিয় একজন ভাবীর ফোন পেলাম। কিন্তু ‘হ্যালো’ বলতেই যখন ওপাশ থেকে ভারাক্রান্ত গলা শুনতে পেলাম, মনটা খারাপ হয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে? ভাবী বললেন, তোমার ভাই হার্ট অ্যাটাক করেছে। আমি মাঝারি আকারের চিৎকার করে বললাম, কী বলছেন! কখন!! ভাবী বললেন, এই তো, আমি তার সঙ্গে যেই শপিংয়ের প্ল্যানটা শেয়ার করলাম, তখনই। আমি বললাম, শপিং তো প্রতি ঈদেই করেন। কই, শপিংয়ের প্ল্যান শুনে কখনই তো ভাই হার্ট অ্যাটাক করেননি! এবার করলেন কেন? ভাবী বললেন, তা কীভাবে বলব! তবে এইটুকু বলতে পারি, ঈদের নরমাল শপিংয়ের বাজেটের সঙ্গে ১০০ ইঞ্চি টিভি, জার্সিসহ আরও কিছু আইটেমের দাম যোগ করেছিলাম। আমার এক বন্ধু বলল, এবার বুদ্ধি করে একটা কাজ করেছি। আমি বললাম, কী কাজ? বন্ধু বলল, এবার ঈদের জন্য যে পাঞ্জাবি পাজামা কিনেছি, সেটা দিয়েই খেলা চালিয়ে দেব। আলাদা জার্সি কিনব না। আমি বললাম, এটা কী করে সম্ভব? জার্সির কাজ পাঞ্জাবি দিয়ে হয় নাকি? বন্ধু বলল, হয়। কারণ, পাঞ্জাবির এক হাতা ব্রাজিলের জার্সির, আরেক হাতা আর্জেন্টিনার জার্সির। পাজামার দুই পায়ের কালারও সেইম।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর