শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
নিবন্ধ

নারীর অপূর্ব জাগরণ

সেলিনা হোসেন

নারীর অপূর্ব জাগরণ

অলংকরণ : শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর শিল্পকর্ম

এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য যে, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আছে। বিশ্বের মুসলিম জনসমাজের সামনে। বলা যাবে না যে শুধু মুসলিমদের সামনে, বলতে হবে সমগ্র বিশ্ববাসীর সামনে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সামনে। সেই অন্ধকার সময়েও নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ছিলেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধাহীন ছিলেন। ভালো-মন্দ বিচারের মাপকাঠিতে বোধের তীক্ষ্নতা ছিল। বিপরীতে নারীকে দমন করার জন্য কূপমণ্ডূক সমাজের নির্মম মানসিকতাও ছিল। সেই সময়ে জন্মের পরপরই মেয়ে শিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়ার নজির ছিল। পাশাপাশি এটাও বলতে হবে যে, পুরুষতন্ত্র প্রবল থাকলেও সব পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম ছিল না। যদি তাই হতো তাহলে সেই সময়ে নারীশূন্য সমাজব্যবস্থা পুরো জনগোষ্ঠীকে জনশূন্য করে ফেলত। সন্তান জন্মদানের কোনো পদ্ধতিই থাকত না এবং মরুভূমির ধু-ধু বালিরাশি হয়ে একটি বিশাল এলাকা মনুষ্যবসতিশূন্য হয়ে যেত। ঈশ্বরের এমন করুণা যে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ নিজেদের বিলুপ্তির মতো পরিস্থিতি নিজেরা তৈরি হতে দেননি। নারীদের দমন করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছে পরবর্তী সময়ে। নারী-পুরুষের বৈষম্যের জায়গা থেকে পিছু হটেনি পুরুষ।

জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের পাঠ্যক্রমের নানা আলোচনায় এই পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। দেখিয়েছেন কীভাবে দমন-পীড়নের বিপরীতে নারী তার প্রতিরোধের জায়গা তৈরি করেছে। নারীকে সহযোগিতা করেছেন জ্ঞানী পুরুষেরা। কিন্তু বলা যাবে না যে, এর দ্বারা পুরো সমাজব্যবস্থায় নারীদের সমতার অবস্থান তৈরি হয়েছিল। সেই অন্ধকার যুগের বিদূষী নারী ছিলেন বিবি খাদিজা। তিনি নিজে ব্যবসা পরিচালনা করতেন। সমাজের একজন বিত্তশালী মহিলা ছিলেন। সামগ্রিক ধারণায় তিনি সামাজিক-অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের একজন দিক-নির্দেশক মানুষ ছিলেন। এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার দক্ষতা ছিল তুলনাহীন।

তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজের সূত্রে যুক্ত হয়েছিলেন হজরত মুহাম্মদ (স.) ততদিনে তিনি নিজের চাচার সঙ্গে কাজের সুবাদে সততা ও নিষ্ঠার জন্য পরিচিত হয়েছিলেন। বিবি খাদিজার পণ্য নিয়ে তিনি সিরিয়ায় যান এবং প্রচুর মুনাফা করে ফিরে আসেন। কয়েকবার এ ধরনের সাফল্য ও সততায় বিবি খাদিজা তার প্রতি মুগ্ধ হন।

বিবি খাদিজা বিধবা ও নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি পঁচিশ বছর বয়সী মুহাম্মদ (সা.)কে বিয়ের প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ (সা.) তার প্রস্তাবে রাজি হন। শুভদিনে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। লক্ষণীয় যে, বিয়ের প্রস্তাব একজন নারীর কাছ থেকে গিয়েছিল। নিজের বিয়ের সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই গ্রহণ করেছিলেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতায়নের একটি দিক।

তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী প্রথম নারী। এখানেও তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণে অগ্রগামী নারীর ভূমিকা পালন করেছেন। ৪০ বছর বয়সে মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তপ্রাপ্ত হন। ঘরে ফিরে তিনি প্রথমে বিবি খাদিজাকে নবুয়তপ্রাপ্তির কথা বলেন। এখানেও নারী-পুরুষের সমতার স্থানটিকে দুজন জ্ঞানী মানুষ সমানভাবে গ্রহণ করেছিলেন। অন্ধকার সরে মানবের জীবনে আলো ফুটতে শুরু করে। বলা হয়, মক্কা পৃথিবীর প্রাচীনতম জনপদ। এই জনপদের অন্ধকার সময়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মুহাম্মদ (সা.) ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে।

২. ইসলামের প্রথম শহীদ যিনি হয়েছিলেন তিনিও একজন নারী। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের সূচনা থেকেই প্রবল বিরোধিতার মুখোমুখি হন। এমনকি তাকে হত্যা করারও চেষ্টা করা হয়। এ সময় যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বিরোধীরা তাদের নানাভাবে নির্যাতন করে। আবু জাহেল নামের গোত্র নেতা সুমাইয়া বিনতে খাব্বাবকে হত্যা করে। সুমাইয়া ছিলেন ইয়াসির ইবনে আমীরের স্ত্রী এবং আমর ইবনে ইয়াসিরের মাতা। এ নারী হলেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম শহীদ। নারীরা হাজার প্রতিকূলতার ভিতরে ইতিহাসে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছেন। তারা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে দ্বিধা করেননি। সমাজ কাঠামো ধরে রাখার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারেও পিছিয়ে থাকেননি। জেন্ডার ইকুয়ালিটির ধারণা নারীরাই সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ইতিহাসের পৃষ্ঠায় সে অবদান স্বীকৃত হয়নি।

৩. নারীর কথা নারীর ইতিহাস। অন্ধকার যুগকে নারী নিজ জ্ঞানে অতিক্রম করেছিলেন। পুরুষতন্ত্রের নিপীড়নের মুখেও নারী সক্রিয় থাকা থেকে বিরত থাকেননি। এ দৃষ্টান্ত একটি ভিন্ন দেশের জনপদের কথা, সেই জনপদ থেকে দীর্ঘ বছর ধরে ধর্ম প্রচারকরা ইসলাম ধর্মের বাণী নিয়ে গিয়েছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। এসেছিলেন ভারতবর্ষে। এসেছিলেন ভারতবর্ষের বাংলার জনপদে। মানুষ ইসলামের মৌলিক চিন্তার মধ্যে নিজের বিশ্বাসের দর্শন খুঁজে পেয়েছিলেন। তারা বুঝেছিলেন ইসলাম শান্তি ও সত্যের ধর্ম, সাম্য ও মৈত্রীর বন্ধনের ধর্ম, জনসেবা ও মানবিকবোধের ধর্ম এবং সবচেয়ে বেশি বিশ্বভ্রাতৃত্বের ধর্ম। এতকিছুর মধ্যে মানুষ নিজের জীবনকে সুন্দর করার স্বপ্ন দেখেছিল। দলে দলে এই ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল। ধর্ম গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ধর্মের এতকিছুর বিপরীতে পুরুষতন্ত্র নারীর প্রতি নিজস্ব ব্যাখ্যায় নিপীড়ন করার সুযোগের ক্ষেত্রে তৈরি করেছিল।

৫৭০ খ্রিস্টাব্দ আমাদের প্রিয় নবীর জন্ম সাল। তার কয়েকশ বছর পরে একজন বিশ্বপর্যটক এদেশে এসেছিলেন কামরূপ, সিলেট ও সোনারগাঁওয়ে। সোনারগাঁও তখন পূর্ববঙ্গের রাজধানী ছিল। বর্তমানে ঢাকা। বিশ্বপর্যটকের নাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে বতুতা। তার রচিত বইয়ের নাম Travels in Asia and Africa 1325-1345. তিনি তার বইয়ের পূর্ব বাংলার হাটে যেসব পণ্য বিক্রি হতো তার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন- এক টাকায় পনেরো মণ চাল, এক আনায় আটটি মুরগি, এক আনায় পনেরোটি কবুতর, তিন আনায় একটি দুগ্ধবতী মহিষ, চার আনায় একটি হৃষ্টপুষ্ট মেষ, চার আনায় বারো সের তেল এবং দুই টাকা আট আনায় একটি সুন্দরী ক্রীতদাসী কেনা যেত। এত দমনপীড়নের পরও নারীরা দেশমাতৃকার মুক্তির স্বপ্ন থেকে নিজেদের আড়াল করে রাখেনি। সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে ইতিহাসের বড় ঘটনা। এমনকি ইতিহাসের পাতায় নারীদের সেসব ঘটনায় সম্পৃক্তির উল্লেখ পাওয়া যায়। সিপাহি বিদ্রোহে ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কে নারীর ফাঁসির উল্লেখ করেছেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ তৈফুর Victoria park played its conspicuous role in the Sepoy Mutiny of 1857 when mutinous Sepoys, uncluding one woman and other people alleged to be involved in the rebellion, were publicly hanged. এ পার্কেই পরের বছরই ১৯৫৮ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার প্রকলামেশন সমবেত জনতার সামনে পাঠ করেছিলেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার। পরবর্তী সময়ে এই পার্কে বিদ্রোহী শহীদ সিপাহিদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। নাম করা হয় বাহাদুর শাহ পার্ক। ইবনে বতুতার এ বিবরণ ইতিহাসের আর একটি দলিল। হাটে মেয়েদের বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে ক্রীতদাসী হিসেবে চালান করার জন্য। পুরুষতন্ত্রের এ এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। এ ধরনের অমানবিক আচরণ থেকে নারীদের মুক্তির পথ খুঁজতে হয়েছে। আমরা কখনো ভুলে যাই না যে, জেন্ডার ইকুয়ালিটির ধারণা ছাড়া নারীর মুক্তি ঘটেনি। ক্ষমতায়ন কি? ক্ষমতায়ন নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক জীবনমান অর্জন। নারীকে ছাড়া সমাজব্যবস্থা সমুন্নত হয় না এ সত্য পুরুষকেও অনুধাবন করতে হয়েছে। যে জন্য সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নারীমুক্তির পথ খুঁজেছে পুরুষ। নারীকে শিক্ষিত করার জন্য স্থাপন করেছে স্কুল। শিক্ষার আলো পেয়ে নারী নিজেদের যুক্ত করেছে সব ধরনের কর্মকাণ্ডে।

মেয়েদের শিক্ষিত করার জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া। স্কুল প্রতিষ্ঠা করে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মেয়েদের ডেকে বের করেছেন। নিজের রচনায় নানা যুক্তি স্থাপন করে উদ্দীপিত লেখা লিখেছেন। মেয়েদের উপদেশ দিয়েছেন। অলঙ্কার ছুড়ে ফেলে দিতে বলেছেন। ডাক দিয়ে বলেছেন, জাগো নারী, জাগো ভগিনীরা। পূর্ববঙ্গে মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী। কেউ কখনো ভাবেননি যে, মেয়েদের ক্লাস ফোর-ফাইভ পর্যন্ত লেখাপড়া শেখাবেন। প্রত্যেকেই মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছেন।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বিপ্লবীর খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। অপারেশনে যাওয়ার আগে একটি অসাধারণ চিঠি লিখেছিলেন। চিঠির উদ্ধৃতি : 'আমি বিধিপূর্বক ঘোষণা করিতেছি যে, যে প্রতিষ্ঠানের উচ্চ আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া, অত্যাচারের স্বার্থসাধনে নিয়োজিত সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ সাধন করিয়া আমার মাতৃভুমি ভারতবর্ষে গণতান্ত্রিক শাসন প্রবর্তন করিতে ইচ্ছুক, আমি সেই ভারতীয় রিপাবলিকান আর্মির চট্টগ্রাম শাখার একজন সদস্যা।'

'ব্রিটিশ জোরপূর্বক আমাদের স্বাধীনতা ছিনাইয়া লইয়াছে। ভারতের কোটি কোটি নর-নারীর রক্ত শোষণ করিয়া তাহারা দেশে নিদারুণ দুর্দশার সৃষ্টি করিয়াছে। তাহারাই আমাদের রাজনৈতিক ধ্বংসের এবং সকল অধঃপতনের একমাত্র কারণ। সুতরাং তাহারাই আমাদের একমাত্র শত্রু। স্বাধীনতা লাভ করার পথে তাহারাই আমাদের একমাত্র অন্তরায়। যদিও মানুষের জীবন সংহার করা অন্যায়, তবু বাধ্য হইয়া বড় বড় সরকারি কর্মচারীর ও ইংরেজদের জীবন-সংহার করিতে আমরা অস্ত্রধারণ করিয়াছি। মুক্তিপথের যে কোনো বাধা বা অন্তরায় যে কোনো উপায়ে দূর করার জন্য আমরা সংগ্রাম করিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।'...

'দেশের মুক্তিসংগ্রামে নারী ও পুরুষের পার্থক্য আমাকে ব্যথিত করিয়াছে। যদি আমাদের ভাইয়েরা মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হইতে পারে, আমরা ভগিনীরা কেন উহা পারিব না? ইতিহাসে অনেক উদাহরণ আছে, রাজপুত রমণীরা অসীম সাহসের সহিত রণাঙ্গনে যুদ্ধ করিতেন এবং স্বদেশের স্বাধীনতা ও নারীত্বের মর্যাদা রক্ষার জন্য তাহারা শত্রুর প্রাণ সংহার করিতে কিছুমাত্র দ্বিধাবোধ করিতেন না। ইতিহাসের পৃষ্ঠা এইরূপ আরও কত নারীর বীরত্বগাথায় পূর্ণ। তবে কেন আমরা আজিকার ভারতীয় নারীরা বিদেশীর দাসত্ব-শৃঙ্খল হইতে নিজের দেশকে পুনরুদ্ধার করিবার জন্য এই মহান যুদ্ধে যোগদান করিব না? যদি বোনেরা ভাইদের সঙ্গে কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দিতে পারে, তবে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগদানে তাহাদের বাধা কী? সশস্ত্র বিদ্রোহে অন্য দেশের বহু নারী যোগদান করিয়াছে, তবে কেন ভারতীয় নারীরা বিপ্লবের এই পন্থাকে অন্যায় বলিয়া মনে করিবে? নারীরা আজ কঠোর সংকল্প নিয়াছে যে, আমার দেশের ভগিনীরা আজ নিজেকে দুর্বল মনে করিবেন না। সশস্ত্র ভারতীয় নারী সহস্র বিপদ ও বাধাকে চূর্ণ করিয়া এই বিদ্রোহ ও সশস্ত্র মুক্তি আন্দোলনে যোগদান করিবেন এবং তাহার জন্য নিজেকে তৈয়ার করিবেন- এই আশা লইয়াই আমি আজ আত্দদানে অগ্রসর হইলাম।'

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার

২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৩২

 

নারীর ক্ষমতায়নের যে উদাহরণ ধরে এই আলোচনার সূত্রপাত করেছি, থেমেছি নারীর আত্দদানের ঘটনায়। প্রীতিলতা দেশমুক্তির ব্রতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এমন উদাহরণ দেওয়ার আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

১৯৩২ থেকে ২০১৫। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের নারীর জীবনে অবিস্মরণীয় জাগরণ ঘটেছে। দুর্যোগে, দুঃসময়ে, সংকটে, নারী পিছিয়ে থাকার নজির স্থাপন করেনি। পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৪ বছর চলছে। নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেলে পরিগণিত হয়েছে বাংলাদেশ। শিক্ষায় এগিয়েছে নারী। প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চতর শিক্ষা পর্যন্ত। সরকারপ্রধান, বিরোধী দলের প্রধান, স্পিকার, সংসদ উপনেতা, নির্বাচিত এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যবৃন্দ আজকের বাংলাদেশের বিপুল পরিসর তৈরি করেছেন। এই নারী সমাজকে আবার আইয়্যামে জাহেলিয়াত সময়ের অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার কথা যারা উচ্চারণ করে তাদের অন্ধকারে পাঠানোর জন্য মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার এগিয়ে আসার এটাই সর্বোত্তম সময়। শেষ করি প্রীতিলতার চিঠির একটি বাক্য দিয়ে- 'নারীরা আজ কঠোর সংকল্প নিয়াছে যে, আমার দেশের ভগিনীরা আর নিজেকে দুর্বল মনে করিবেন না।'

 

সর্বশেষ খবর