শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে পিয়ানো রহস্য

ফরিদুর রেজা সাগর

পঞ্চগড়ে পিয়ানো রহস্য
ছোটকাকু লক্ষ্য করলেন ফুলপরীর কথা বলার মধ্যে এক ধরনের কনফিডেন্ট আছে। কেন যেন তার কথায় বিশ্বাস হচ্ছে। ছোটকাকু সিদ্ধান্ত নিলেন শওকত জামিলের গাড়িতে যাবেন না। এমন যদি হতো যে তার গাড়ি পঞ্চগড় পর্যন্ত যাবে। তাহলে তার গাড়িতে ওঠা একটা যুক্তিযুক্ত কাজ হতো। দিনাজপুর পর্যন্ত যাবেন শওকত জামিল।

ভাবতে না ভাবতেই মিরাজ কাদেরীর ফোন এলো। ফোন রিসিভ করে কথা বলতে বলতে মাইক্রোবাসে উঠে বসলেন ছোটকাকু। ড্রাইভার মাইক্রোবাস ছেড়ে দিল। ছোটকাকু মাথা বাড়িয়ে গাড়ির সামনের মিররে চোখ রাখলেন। প্রাইভেট কারটিও আসতে শুরু করেছে। ফোনে মিরাজ কাদেরী হ্যালো, হ্যালো... করেই যাচ্ছেন। ছোটকাকু বললেন, কাদেরী বল!

তোমরা এখন কত দূরে।

জায়গার নাম বলতে পারব না। তবে মনে হচ্ছে দিনাজপুরের কাছাকাছি।

পথে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?

না, তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে তোমাকে একটা ঘটনা জানানো দরকার।

ছোটকাকুর কথায় রহস্যের গন্ধ পেয়ে মিরাজ কাদেরী ব্যস্ত হয়ে বললেন, কী ঘটনা বল তো?

আমার ধারণা একটা লোক সেই ঢাকা থেকে আমাকে ফলো করছে।

তাই নাকি?

হ্যাঁ।

তোমাকে ফলো করছে সেটা বুঝলে কী করে?

ছোটকাকু মৃদু হেসে বললেন, মিরাজ তুমি বোধকরি ভুলে যাচ্ছো আমি একজন গোয়েন্দা। মানুষের ভাবভঙ্গি দেখেই অনেক কিছু বুঝতে পারি।

মনে হলো মিরাজ কাদেরী একটু ভয় পেয়েছেন। কণ্ঠে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে ছোটকাকুকে জিজ্ঞেস করলেন, যে লোক তোমাকে ফলো করছে তার বয়স কেমন?

বয়স আনুমানিক ৬০-৬৫। ভয়ংকর চেহারা। দিনে দুপুরে কালো চশমা পরে আছে। মাথায় কাউবয় টাইপের টুপি।

ছোটকাকুকে থামিয়ে দিয়ে মিরাজ কাদেরী বললেন, ছোটকাকু আমি কি দিনাজপুরের দিকে এগোব?

কেন? জানতে চাইলেন ছোটকাকু।

মিরাজ কাদেরী বললেন, না, মানে আমি দিনাজপুর পর্যন্ত এগোই। তারপর না হয় একসঙ্গে পঞ্চগড়ে আসা যাবে। শোনো মাইক্রোবাস পঞ্চগড় রেলস্টেশন পর্যন্ত আসবে। তারপর তোমার জন্য ঘোড়ার গাড়ির ব্যবস্থা আছে। তুমি ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে আমাদের গ্রামে আসবে।

মিরাজ কাদেরী ফোন কেটে দিলেন।

গাড়ি দ্রুতগতিতেই চলছে। হঠাৎ ড্রাইভার ভয়ার্ত কণ্ঠে ছোটকাকুকে উদ্দেশ করে বলল, স্যার একটা কথা বলব?

ছোটকাকু বললেন, হ্যাঁ বল!

ড্রাইভার ভয়ার্ত কণ্ঠেই বলল, পেছনে একটা গাড়ি আমাদের মনে হয় ফলো করছে।

তাই নাকি?

হ্যাঁ।

মজিদ বিএসসি জানালায় মাথা বাড়িয়ে পেছনে দেখে নিয়ে ফুলপরীকে উদ্দেশ করে বলল, ফুলপরী তোমার কী মনে হয়? আমরা কি কোনো সমস্যায় পড়তে যাচ্ছি?

ফুলপরী পেছনে না তাকিয়েই বলল, হ্যাঁ আমরা একটা ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছি। তবে সেটা ভয়ের কারণ হবে না।

আমরা কি গাড়ি থামাব?

না, গাড়ি থামানোর দরকার নেই।

ছোটকাকু এই প্রথম ফুলপরী নামের মেয়েটির প্রতি কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। সে যে বলল আমরা ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছি... কীভাবে বলল! এটা শুধুই ধারণা নাকি অন্য কিছু? ছোটকাকু ফুলপরীকে জিজ্ঞেস করলেন, ফুলপরী তুমি কী করে বুঝলে আমরা বিপদে পড়তে যাচ্ছি?

ফুলপরী মৃদু হেসে বলল, স্যার এই তর্কটা আমরা পরে করব। এখন বরং আমাদের কী করা উচিত সেটাই ভাবা দরকার।

তুমি নিশ্চিত আমরা বিপদে পড়তে যাচ্ছি?

হ্যাঁ।

কেমন বিপদ?

সামান্য বিপদ।

কী ধরনের বিপদ?

সেটা বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা একটা ঝামেলায় পড়ব এটা নিশ্চিত।

তুমি কী কর? পড়?

হ্যাঁ।

কোন ক্লাসে?

ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ার।

তোমার বাবা-মা...?

মা বেঁচে নেই। বাবা বেঁচে আছেন। কবিরাজ।

তোমার ভাইবোনের সংখ্যা?

আমার কোনো ভাইবোন নেই। আমি একা।

তাহলে তো বাবার আদরের ধন।

ফুলপরী মৃদু হেসে বলল, বিপদটা হয়তো আর ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই ঘটবে। আসেন আমরা সবাই বিপদের জন্য অপেক্ষা করি...

ছোটকাকু যারপরনাই অবাক হলেন। পুঁচকে একটা মেয়ে। অথচ দারুণ রহস্য করে কথা বলছে! সত্যি সত্যি কি কোনো বিপদ আসন্ন? মিরাজ কাদেরীকে ব্যাপারটা জানানো দরকার ভেবে পরক্ষণেই ‘না’ সিদ্ধান্ত নিলেন। হঠাৎ গাড়িতে একটা প্রচণ্ড শব্দ হলো। একটা ঝাঁকুনি দিয়ে গাড়ি রাস্তার পাশেই উল্টে পড়ে যাচ্ছিল। ড্রাইভারের দক্ষতায় গাড়ি উল্টে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু পেছনে বাঁ দিকের চাকা ফেটে গেছে। তার মানে চাকা ঠিক না করলে গাড়ি সামনে যাবে না। পথে ঝামেলা হতে পারে ভেবে কার-মাইক্রোবাসে সাধারণত বাড়তি চাকা রাখা হয়। অথচ এ গাড়িতে বাড়তি চাকা নেই। তাহলে সামনে যাওয়ার উপায় কী? মিরাজ কাদেরীকে ফোন করলেন ছোটকাকু। ফোন বন্ধ। মজিদ বিএসসি ভয়ার্ত চোখে-মুখে মোবাইলে কাকে যেন ফোন করার চেষ্টা করছে। ফোনে তাকে পাচ্ছে না। ছোটকাকু গাড়ি থেকে নেমে পড়েছেন। অন্য সবাইও গাড়ি থেকে নামল। গাড়ির চাকা ফাটার শব্দ পেয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আশপাশের লোকজন ছুটে আসছে গাড়ির দিকে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গাড়ির সামনে পেছনে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়ে গেল। নানান জনের নানান মন্তব্য। ছোটকাকু ফুলপরীকে নিয়ে ভাবছেন। এ মেয়ে কী করে বুঝত পারল যে একটা বিপদ আসন্ন?

মানুষের ভিড় বাড়তেই থাকল। ভিড়ের মাঝে কয়েকজন ছোটকাকুকে চিনে ফেলেছে। তাদেরই একজন এগিয়ে এসে ছোটকাকুকে বলল, আমি আপনাকে চিনি। আপনি ছোটকাকু। চ্যানেল আইতে আপনাকে দেখেছি। সীমান্ত আসেনি? অর্ষা আপু? আমি কি আপনার সঙ্গে একটা সেলফি তুলতে পারি?

ছোটকাকু একটু অবাকই হলেন। দিনাজপুরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মানুষ তাকে চেনে! সেলফি তোলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। একজনের দেখাদেখি আরও কয়েকজন সেলফি তুলল। মজিদ বিএসসি দারুণ অস্থির হয়ে উঠেছে। ড্রাইভারকে বারবার ধমকাচ্ছে। মিয়া আপনার কি কোনো দায়িত্ব নেই। গাড়িতে বাড়তি একটা চাকা থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। আপনার গাড়িতে কে যাচ্ছেন আপনি বুঝতে পেরেছেন। দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ভিআইপি। তাকে কি এখন আমি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখব। উপায় কী বলেন?

ড্রাইভার ভয় পেয়েছে। গাড়িতে সব সময়ই একটি বাড়তি চাকা থাকে। সপ্তাহখানেক আগে গাড়ির সামনে ডান দিকের একটা চাকা নষ্ট হয়ে যায়। তখন ওই বাড়তি চাকাটি রিপ্লেস করা হয়। নিয়ম মতো তখনই বাড়তি চাকা জোগাড় করে গাড়িতে রাখার কথা। গাড়ির মালিককে সে কথা বলেছিল ড্রাইভার। মালিক বাড়তি চাকা কিনবেন বলার পরও কেনা হয়নি। এখানে মালিকের কোনো অপরাধ নেই। যত অপরাধ ড্রাইভারের। তার তাগাদা দেওয়া উচিত ছিল।

ভিড় ক্রমাগত বাড়ছেই। সামনে পেছনে যানজট লেগে গেছে। হঠাৎই একটি কার এসে থামল। এ কারটিই ছোটকাকুর গাড়ি ফলো করছিল। গাড়িতে দুজন মানুষ। একজন ড্রাইভার। অন্যজন... সেই ভয়ংকর লোকটি। কালো চশমা পরে রহস্যজনক ভঙ্গিতে গাড়ির পেছনের সিটে বসে আছে। কে এই লোক? রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ছোটকাকু সামনে পা বাড়ালেন। ভয়ংকর লোকটি গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন। ছোটকাকু এবং ভয়ংকর লোকটি মুখোমুখি দাঁড়ালেন। কেউ কোনো কথা বলছেন না। হঠাৎ ভিড়ের মাঝ থেকে একজন বয়স্ক লোক দৌড়ে এসে ভয়ংকর লোকটিকে সালাম দিয়ে বলল, স্যার আপনি! কেমন আছেন?

ভয়ংকর লোকটি মৃদু হেসে বললেন, ভালো আছি। আপনারা কেমন আছেন?

আমরাও ভালো আছি। স্যার আপনি বহু বছর পর দেশে এলেন।

হ্যাঁ বহু বছর পরই... কথা বলতে বলতে ছোটকাকুর মুখের দিকে তাকালেন ভয়ংকর লোকটি।

স্যরি আপনাকে আমার পরিচয় দেওয়া হয়নি। আমি শওকত জামিল। দিনাজপুরে বাড়ি। সরকারের গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করতাম। রিটায়ার করেছি।

শওকত জামিলকে চিনে ফেললেন ছোটকাকু। নামকরা গোয়েন্দা। কিন্তু তিনি তো এভাবে কালো চশমা পরতেন না।

ছোটকাকুর ভাবভঙ্গি বুঝতে পেরে শওকত জামিল বললেন, আমার কালো চশমা নিয়ে বোধকরি আপনার বেশ কৌতূহল হচ্ছে। বাধ্য হয়ে পড়ি। বাঁ চোখ নষ্ট। দেখলে ভয়ংকর লাগে। তাই কালো চশমা পরি। বলেই চশমা খুলে ফেললেন শওকত জামিল। তার নষ্ট চোখ দেখে সত্যি সত্যি আঁতকে উঠলেন ছোটকাকু। মৃদু হেসে বললেন, প্লিজ আপনি চশমা পরেই থাকুন। চোখের এ অবস্থা কী করে হয়েছিল?

শওকত জামিল চোখে কালো চশমা পরতে পরতে বললেন, সে এক ভয়ংকর কাহিনি। যদি আবার আমাদের দেখা হয় তাহলে বলব, আপনার গাড়ি তো নষ্ট, যাবেন কী করে? ধারণা করছি আপনি পঞ্চগড়ে যাবেন। মিরাজ কাদেরী আপনার বন্ধু। রাইট?

জি। আপনি কি মিরাজকে চেনেন?

হ্যাঁ ভালো করে চিনি। পঞ্চগড়ে বলতে গেলে তারা তো জমিদার টাইপের মানুষ। চারটা বাগান আছে। ব্যক্তিগত একটা পার্কও আছে। সেখানে হরিণ, বাঘসহ নানা ধরনের পশু-প্রাণী দেখতে পাবেন। পুকুর আছে সাতটা। আপনি কি সেখানে গুপ্তধনের সন্ধানে যাচ্ছেন?

শওকত জামিলের শেষ কথাটা ছোটকাকুকে বেশ অবাক করল। মিরাজ কাদেরীর দাদার গোপন ডায়েরির কথা কি তাহলে এই লোকও জানে? তবে যে ডায়েরির কথাটা গোপন রাখতে বলেছে মিরাজ। কেন বলেছে?

শওকত জামিলই বিষয়টা পরিষ্কার করলেন। গুপ্তধনের ব্যাপারটা আমাকেও বলেছিল মিরাজ কাদেরী। কিন্তু আমার এখন আর সেই ধৈর্য নেই। চোখটা নষ্ট হওয়ার পর থেকে আমি খুব একটা জনসমক্ষে বের হই না। ঢাকায় ধানমন্ডিতে আমার নিজের বাড়ি আছে। সেখানেই থাকি। ছোটকাকু এক কাজ করেন, আপনি আমার সঙ্গে দিনাজপুর পর্যন্ত চলেন। সেখান থেকে আমি আপনাকে পঞ্চগড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।

শওকত জামিলকে এখন আর আগের মতো ভয়ংকর মনে হচ্ছে না। তবে তার ওপর ভরসা করতেও সাহস হচ্ছে না ছোটকাকুর।

মাইক্রোবাসের চাকা পাল্টাতে সময় লাগবে। মজিদ বিএসসি ড্রাইভারকে বারবার তাগাদা দিচ্ছে। ড্রাইভার ফোনে কথা বলছে। বোধকরি মাইক্রোবাসের মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করছে। ফুলপরী অবাক চোখে সবাইকে দেখছে। ছোটকাকুর একবার মনে হলো ফুরপরীর সঙ্গে ডিসকাস করবেন। শওকত জামিলের সঙ্গে যাওয়াটা ভালো হবে না মন্দ হবে। একটু আগে মেয়েটি একটা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। সঙ্গে সঙ্গে সেটা কার্যকর হয়েছে। যদিও এতে ফুলপরীর কোনো ক্যারিশমা আছে বলে মনে করেন না ছোটকাকু। তবু ফুলপরীর সঙ্গে কথা বলা জরুরি মনে হলো। ফুলপরীকে ডাক দিলেন। ধীর পায়ে এগিয়ে এলো ফুলপরী। ছোটকাকু জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ভবিষ্যদ্বাণী তো ফলে গেল। সামনের ভবিষ্যৎ বলতে পারবে? ওই লোকটি আমাকে দিনাজপুর পর্যন্ত নিয়ে যাবে বলছে। সেখান থেকে পঞ্চগড় কতদূর।

ফুলপরী বলল, আরও ২ ঘণ্টার পথ।

আমাদের গাড়ি কতক্ষণে ঠিক হবে তার তো নিশ্চয়তা নেই।

ছোটকাকুর কথা কেড়ে নিল ফুলপরী। বলল, আপনি কি ওই লোকের সঙ্গে যেতে চান?

হ্যাঁ।

সেটা ঠিক হবে না।

কেন?

আমাকে আর কোনো প্রশ্ন করবেন না। অপেক্ষা করুন। আমাদের গাড়ি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। আমরা নিজেদের গাড়িতেই রওনা দিতে পারব।

ছোটকাকু লক্ষ করলেন ফুলপরীর কথা বলার মধ্য এক ধরনের কনফিডেন্ট আছে। কেন যেন তার কথায় বিশ্বাস হচ্ছে। ছোটকাকু সিদ্ধান্ত নিলেন শওকত জামিলের গাড়িতে যাবেন না। এমন যদি হতো যে তার গাড়ি পঞ্চগড় পর্যন্ত যাবে। তাহলে তার গাড়িতে ওঠা একটা যুক্তিযুক্ত কাজ হতো। দিনাজপুর পর্যন্ত যাবেন শওকত জামিল। সেখান থেকে নতুন বাহন, নতুন মানুষ। এ ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না। শওকত জামিলকে ‘না’ বলে দিলেন ছোটকাকু। শওকত জামিল একটু যেন অবাক হলেন। তবে বুঝতে না দিয়ে বললেন, ভাই যে রহস্যের খোঁজে যাচ্ছেন, বেশ রিস্কি... সাবধানে থাকবেন। পঞ্চগড়ে আছেন তো কয়েক দিন?

হ্যাঁ। জবাব দিলেন ছোটকাকু।

শওকত জামিল মৃদু হেসে বললেন, দেখি সময় পেলে আসব একদিন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

মানুষের ভিড় ঠেলে শওকত জামিলের গাড়ি ছুটতে শুরু করল রাস্তায়।

 

মিরাজ কাদেরী বারবার ফোন দিচ্ছে। পাঁচ মিনিট আগে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে, ছোটকাকু তোমরা এখন ঠিক কোন জায়গায় আছো বল তো।

জায়গাটা চিনতে পারছেন না ছোটকাকু। দিনাজপুরে খুব বেশি আসা হয়নি। এর আগে একবার অথবা দুবার হবে। পঞ্চগড়ে একবারও আসা হয়নি।

মিরাজ কাদেরী জানতে চাইলেন- ছোটকাকু তোমরা কি দিনাজপুর ক্রস করেছ?

হ্যাঁ।

তোমাদের গাড়ির আর কোনো সমস্যা নেই তো?

সেটা বোধকরি ড্রাইভার ঠিকমতো বলতে পারবে।

তোমার সঙ্গে কোনো এক ভয়ংকর লোকের নাকি দেখা হয়েছে?

হ্যাঁ।

নাম কী?

শওকত জামিল।

এক চোখ নষ্ট?

হ্যাঁ।

তার সঙ্গে তোমার দেখা হলো কীভাবে?

ঢাকায় এয়ারপোর্টে দেখা। ফ্লাইটে আমার পাশেই তার সিট পড়েছিল।

বল কী! সে কি তোমাকে কিছু বলেছে?

হ্যাঁ।

কী বলেছে?

গুপ্তধনের কথা সে জানে।

[ চলবে ]

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর