শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘আমরা দুজনই হুমায়ূন স্যারের আবিষ্কার’

‘আমরা দুজনই হুমায়ূন স্যারের আবিষ্কার’

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত নাটক-চলচ্চিত্রের নিয়মিত মুখ হিসেবে রঙিন ভুবনে পরিচিত তারা। অসংখ্য নাটকে কাজ করে কুড়িয়েছেন নাম-যশ-খ্যাতি। দর্শকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। টিভি পর্দা আর বড় পর্দায় অভিনয় দিয়ে তারা মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন। একই অঙ্গনে কাজ করার সুবাদে হয়েছে বন্ধুত্ব, যা দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছে অটুট। বলছি জনপ্রিয় দুজন অভিনেতা ডাক্তার এজাজুল ইসলাম ফারুক আহমেদের কথা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ বিভাগের আড্ডা আয়োজনে অতিথি হয়ে তারা এসেছিলেন। এই দুজনের সঙ্গে প্রাণবন্ত সেই আড্ডা তুলে ধরেছেন-পান্থ আফজাল। ছবি : রাফিয়া আহমেদ

 

হালকা শীত। কথামতো অভিনেতা ডা. এজাজ আর ফারুক ভাই সকাল ৯টার আগেই অফিসে হাজির। সেই জাদুকরী হাসি, সেই ব্যক্তিত্ব। পরিচিত মুখটা দেখেই এজাজ ভাই গালটেপা হাসি দিলেন। আর ফারুক ভাই ঠোঁটে হাসির রেখা টেনে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আগেই কিন্তু এসে পড়লাম’  ডা. এজাজ বললেন, ২১-২২ ঘণ্টা কাজ করি; মাত্র ২-৩ ঘণ্টা ঘুমাই। কম ঘুম যদিও ক্ষতিকর। পেশায় চিকিৎসক বলে হুমায়ূন আহমেদ শুটিংয়ের সময় আমার সময়সূচিকে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন। খেয়াল রেখেছেন নাটক করতে গিয়ে যেন কোনো রোগীর ক্ষতি না হয়। আর সে কারণেই সমান তালে রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে অভিনয় চালিয়ে গেছি। আর সব নির্মাতাকেই বলি, ভাই আমার সময় কিন্তু কম। আমাকে নিলে আপনার এই ঝামেলা পোহাতে হবে। ফ্রি সময়ের মধ্যে কাজটুকু শেষ করে ফেলতে হবে। তারা কিন্তু আমার প্রতি এই মমতাটুকু দেখায়। আবার দেখা যায়, শুটিং চট্টগ্রাম, বরিশালে করতে হবে। তখন আগেই ‘না’ বলি। সব সময় বলি, উত্তরা, পুবাইল, এমন জায়গায় শুটিং করতে।’

ফারুক আহমেদ তার কথার সঙ্গে যোগ করে বললেন, আমরা তো সিনসিয়ার জাতি কখনই ছিলাম না। কেউ সময়জ্ঞানের ব্যাপারে সচেতন না। ৯টায় বললে ১২টায় গিয়ে শুটিং সেটে উপস্থিত হয়। সে জন্যই কখনো কখনো নির্মাতারাও লেটনাইট করে শুটিং শেষ করে।’ ডা. এজাজকে একফাঁকে প্রশ্ন করলাম, আপনি তো বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন? ‘জি’ ছোট করে উত্তর দিলেন তিনি। এরপর একপলক তাকিয়ে থেকে কথার রেশ ধরেই বলতে শুরু করলেন, ‘আমি পেশার সঙ্গে অভিনয়টাকে খুবই এনজয় করি। পেশা আর নেশায় তাই কখনো সমস্যা হয়নি। আর সামান্য যেটুকু অভিনেতা হয়েছি, সেটি করতে পারতাম না যদি স্যারের (হুমায়ূন আহমেদ) সঙ্গে কাজ না করতাম।’ নব্বইয়ের দশকের তুমুল জনপ্রিয় নাটক ‘আজ রবিবার’ মতি মিয়া একটি সংলাপ দিতেন, ‘অধিক কথা বলার সার্থকতা নাই। মতি মিয়া অধিক কথা পছন্দ করে না।’ তো সেকালের মতি মিয়া, তৈয়ব কিংবা হালের সিকান্দার বক্সের ‘মামা’ কি আসলেই অধিক কথা বলা পছন্দ করে না? কথা শুনে খুব কনফিডেন্টলি বললেন, ‘পর্দায় সহজ-সরল ও বোকার মতো অপ্রিয় সত্য মুখের ওপর বলে ফেলি। তবে নিশ্চিত করছি, নাটকে প্রচুর কথা বললেও বাস্তব জীবনে আমি যথেষ্ট ব্যালেন্সড।’ পর্দায় কমেডির বাইরে সিরিয়াস চরিত্রে দেখা যায় না কেন? জবাবে বললেন, ‘পরিচালকরা অভিনেতাদের একটা ছকে বেঁধে ফেলেন। তারা রিস্ক নিতে চান না। মঞ্চনাটকে অধিকাংশ সময়ই সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করেছি। মনে হয়, আমি সিরিয়াস অভিনয়েই বেশি ভালো।’ হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে পথচলা বহু বছরের। তার বিভিন্ন নির্মাণে আপনাকে পাওয়া গেছে বিভিন্ন চরিত্রে। তাকে তো আপনি স্যার বলে সম্বোধন করতেন? একটু নড়েচড়ে বসে ডা. এজাজ মুখ খুললেন, ‘তিনি আমার শিক্ষকের বন্ধু ছিলেন বলেই সবসময় ‘স্যার’ বলেই সম্বোধন করেছি। স্যারের পরিচালনায় প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছিলাম ‘সবুজ সাথী’ নাটকে, স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠকর্মী হিসেবে। চরিত্র ছিল ছোট। এটির পর থেকেই স্যারের প্রায় সব নির্মাণেই থাকতাম। আর তাঁর সঙ্গে প্রথমবার কাজ করি ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে।’ হুমায়ুন আহমেদের নাটকে কীভাবে আসা? ফারুক আহমেদ কিছুক্ষণ ভেবে বলা আরম্ভ করলেন, রিয়াজউদ্দিন বাদশা জানালেন, হুমায়ূন আহমেদের একটা নাটকে কাজ করতে হবে। ‘অচীনবৃক্ষ’, প্রচার হবে বিটিভিতে। রিয়াজউদ্দিন বাদশা ছিলেন ওটার প্রোডিউসার। তখন থেকেই শুরু তার সঙ্গে কাজ করা। স্যার বেঁচে থাকাকালীন প্রায় সব নাটকেই অভিনয় করেছি। তবে টেলিভিশনে আমার প্রথম নাটক ‘গ্রন্থিকগণ কহে’। এরপর ইমদাদুল হক মিলনের ‘বার রকমের মানুষ’। তারপর করলাম ‘মাটির ও পিঞ্জিরার মাঝে’ এবং ‘আজ রবিবার’।’ হুমায়ুন স্যার তো তার ‘লিলুয়া বাতাস’ বইটি আপনাকে উৎসর্গ করেছিলেন? ‘হ্যাঁ’-ছোট করে উত্তর দিলেন তিনি। হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে আপনার ঝুলিতে রয়েছে হাজারো গল্প। কিছু স্মৃতি শেয়ার করবেন? মনে হলো স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ডা. এজাজ ফিরে গেলেন নুহাশপল্লীর সেই সময়ে। স্মৃতিকাতর হয়ে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলা শুরু করলেন, ‘নির্মাণের নানা কাজেও স্যার আমার ওপর ভরসা রাখতেন। শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের সময় দেখি স্যারের ঠিক করা লোকেশনে গিয়ে শুটিং সম্ভব না। কিন্তু ‘স্যার’কে বলতেও পারছিলাম না ব্যাপারটা। তাই তাকে দুশ্চিন্তায় না ফেলে মুহূর্তের মধ্যেই শুটিং লোকেশন ঠিক করে ফেলি। আমার কাজে অবাক হয়ে স্যার তখন ‘গুড জব ডাক্তার’ বলে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বাহবা দিয়েছিলেন। আবার নুহাশ পল্লীর জন্য জায়গা দেখতে গিয়ে এক রিকশায় স্যারের সঙ্গে গ্রামের রাস্তায় চলার কথা ভুলিনি। সেদিনই প্রথম জেনেছিলাম বৃষ্টিতে ভিজতে স্যার অনেক পছন্দ করতেন। সেদিন খাবার তালিকায় ইলিশ মাছ দেখে দারুণ খুশি হয়েছিলেন স্যার। আর স্যারকে খুশি করা খুব সহজ ছিল। শুটিং চলাকালীন বা শুটিং শেষে একই রকম মানুষ ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সব সময় সবার খেয়াল রাখতেন। আর তার কাছে সবচেয়ে অপছন্দের বিষয় ছিল মিথ্যা কথা।’ এবার অভিনেতা ফারুকের পালা। তিনি একটি মজার স্মৃতি টেনে বললেন, ‘স্যার ছিলেন খুবই মজার মানুষ। যখন যা করতে ইচ্ছা হতো করতে দ্বিধাবোধ করতেন না। আজ রবিবার নাটকের একটি দৃশ্য ছিল ফুলদানি ভাঙা। সেই নাটকে কিন্তু আমার স্ত্রীও অভিনয় করেছিল। সেই দৃশ্য করতে একটু দামি ফুলদানির দরকার ছিল, যা কেউ ম্যানেজ করতে পারেনি। দৃশ্যটি টেক করার আগে স্যার গুলতেকিনকে ডাকলেন, গুলতেকিন, বিদেশ থেকে আনা ফুলদানিটা নিয়ে এসো।’ স্যারের স্ত্রী গুলতেকিন যখন বুঝতে পারলেন এই দৃশ্যের জন্য তিনি বিদেশ থেকে আনা লাখ টাকার ফুলদানি ভাঙবেন তখন তিনি অনেক অনুনয় শুরু করে দিলেন। স্যার মানছেই না, ভাঙবেনই। শেষ পর্যন্ত স্যারের মন গলে। তিনি অন্য একটি ফুলদানি ভেঙে দৃশ্যটি করেন।’ আপনাদের  বন্ধুত্ব কত বছরের? একসঙ্গে তারা বলে উঠলেন, ‘প্রায় ১৪-১৫ বছর!’ ফারুক বলে উঠলেন, ‘জোর করেই বন্ধুত্ব হয় আমাদের। ডাক্তার সাব সব সময়ই সেক্রিফাইজ করত। আমাদের দুজনের সঙ্গে স্বাধীন খসরুও ছিলেন। একসঙ্গে ঘুমাতাম। আমি সর্বদা কর্নারে থাকতাম।’ তার কথায় সায়ও দিলেন ডা. এজাজ। হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় এতগুলো কাজের মধ্যে কোন কাজটি সবচেয়ে প্রিয়? ডা. এজাজ বললেন, ‘আলাদা করে কোনোটির নাম বলা সম্ভব নয়। যত কাজই করা হোক না কেন, যত ভালো কাজই হোক, স্যারকে সব স্থানেই খুঁজে বেড়াই। মৃত্যুর পর তাঁর জন্মদিনেও অন্য সবার মতো আনন্দ করতে পারি না। কারণ, মৃত পিতার জন্মদিনে সন্তানের উচ্ছ্বাস মানায় না।’ কথাগুলো শোনার ফাঁকে লক্ষ্য করলাম কয়েক ফোঁটা অশ্রু জমেছে গরিবের ডাক্তার খ্যাত এই অভিনেতার চোখে। নীরবতা ভেঙে ফারুক আহমেদ বলতে লাগলেন, ‘একবার নেত্রকোনায় স্যারের ‘অদেখা ভুবন’ নাটকের শুটিং করতে গেলে আমাদের ফুলের মালা ও গান গেয়ে বরণ করেন। মনির হোসেন জীবনও ছিল সে সময়।’ স্যার তো বিশাল আয়োজন করে শুটিং করত, তাই না? প্রত্যুত্তরে ডা. এজাজ মুচকি হাসলেন। বললেন, ‘স্যার ছিল নির্লোভ মানুষ। যা করতে ইচ্ছে হতো তিনি তা বিশাল করে করতেন। মনের আনন্দের জন্য, মনের প্রশান্তির জন্য তিনি সবই করতেন। শ্রাবণ মেঘের দিন বা দুই দুয়ারীর শুটিংয়ের আয়োজন ছিল বিশাল। দুই দুয়ারী যদি তিনমাস টানা চলত তাহলে সে সময় তিনি ২০-৩০ কোটি টাকা ব্যবসা করতে পারতেন। তিনি নির্লোভ বলেই সেই চিন্তা করেননি।’

তার কোনো ইচ্ছে ছিল, যা পূরণ হয়নি? ‘একটি ক্যান্সার হাসপাতাল করার ইচ্ছে ছিল’-বললেন ডা. এজাজ। নাট্যজগতে হুমায়ূন আহমেদের শূন্যতা কতখানি? ‘শূন্যতা তো পূরণ হওয়ার নয়। হুমায়ূন আহমেদ যেভাবে নাটক করতেন সেভাবে লেখা আর ডিরেকশন দেওয়া এখন আর এই পর্যায়ে কাছাকাছিও কেউ নেই। বিশেষ করে হাসির নাটক তো না-ই। হাসির নাটক মানে এখন হয়ে গেছে চিৎকার চেঁচামেচি, হাসির নাটক মানে হয়ে গেছে ভাঁড়ামি, হাসির নাটক মানে লোক ঠকানো, মিথ্যা শেখানো, জোর করে হাসানোর চেষ্টা, হাসির নাটক মানে ঝগড়া, চেহারা বিকৃত করা, আমি নিজেও চেহারা বিকৃত করি। এখন আর ওই ধরনের নাটকও নাই, ওই শ্রেণির দর্শকও নাই। নাটকের নাম শুনলেই বুঝবেন কেমন ধরনের হয়।’ একনাগাড়ে বলে গেলেন ফারুক আহমেদ। চিকিৎসা নাকি অভিনয়-কোন জায়গাটি বেশি পছন্দের?

ডা. এজাজ বললেন, ‘দুটোই। তবে যদি কোনোটিকে ছাড়তে বলা হয় তাহলে বোধ হয় অভিনয় ছেড়ে দেব। একবার ১৫ দিন অসুস্থ হয়েছিলাম। রোগীরা অনেক দোয়া করেছিল। তাদের ভালোবাসাটা অন্যরকম। ‘শ্যামল ছায়া’র শুটিং যখন করতাম, প্রতিদিন রোগীরা খাবার নিয়ে আসত। একবার হুমায়ুন স্যার বললেন, ‘ও এত খাবার পায় কোথা থেকে।’ তখন অন্যরা বলেছিলেন, ‘তার রোগীরা খাবার দিয়ে যায়।’ এটা সবার ভালোবাসা।’ নাটক বা চলচ্চিত্রের অবস্থা আগের জায়গায় নেই কেন? ‘আসলে সে কাজ আর নাই। কাজের যে আনন্দ, যে উচ্ছ্বাস সেটা এখন আর নাই। হুমায়ূন স্যার যখন কাজ করতেন দেখেছি তার একটা টার্গেট ছিল, একটা ভালো কাজ করব। অর্থ কী পাব কী পাব না-সেটা নিয়ে ভাবেননি। এখন আমরা নাটক করতে গেলে ছবি করতে গেলে আগে টাকার অঙ্ক নিয়ে বসি। উনি বলতেন, কত সুন্দর ছবি করব, দর্শক আমার ছবি কতটা উপভোগ করবে। এখনকার টার্গেটই তো অন্যরকম। এখন অঙ্কটা লাভের, অঙ্কটা কাজের না’-বললেন ডা. এজাজ। জীবনের প্রথম প্রেম? ‘মেয়ে দেখলেই আগে প্রেমে পড়ে যেতাম। একতরফা প্রেমই বেশি ছিল। তবে স্ত্রীর সঙ্গেই আমার সিরিয়াস প্রেম! সাত বছর অপেক্ষা করে ওকে বিয়ে করতে হয়েছে।’ খুবই মজা করে কথাগুলো বললেন ফারুক আহমেদ। তার সঙ্গে ডা. এজাজ যোগ দিয়ে বললেন, ‘আমি যখন ইন্টারমিডিয়েট পড়ি তখনই বুঝেছিলাম প্রেমটা হলো ভুয়া একটা ব্যাপার। ফেইক। মানে বিফোর ম্যারেজ প্রেমটা ভুয়া, আমার মনে হয় আফটার ম্যারেজ প্রেমটা আসল। বিয়ের আগে যে কাউকে ভালো লাগেনি তা না। এগুলো হলো ছুটা প্রেম।’ তার দিকে আবারও প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম, চলচ্চিত্রে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া নিয়ে জানি আফসোস রয়েছে? ‘তারকাঁটা’ ছবিতে। তবে পুরস্কারটা পাওয়ার পর থেকেই আফসোস। কারণ হুমায়ূন স্যারের শ্রাবণ মেঘের দিন ছবিতে অভিনয় করেছি তখন পাইনি, শ্যামল ছায়াতে পাইনি। এ দুটো ছবিতে আমার মনে হয় আমি তারকাটার চেয়েও ভালো অভিনয় করেছি।’ হাসির মন্ত্রটা কীভাবে রপ্ত করলেন? ফারুক আহমেদ একগাল হেসে উত্তর দিলেন,

‘আসলে এ সবই সংলাপের ক্রেডিট বলা চলে। হুমায়ুন স্যার ছিলেন উঁচুমানের নির্মাতা-লেখক। আমার দেখা ভালো মানুষের মধ্যে অন্যতম।’ তার কথা কেড়ে নিয়ে ডা. এজাজ যোগ করলেন, মানুষকে ‘হাসানো কঠিন; কিন্তু কাঁদানো সহজ।

ফারুক আহমেদ বললেন, ‘২০০৯ সালে ‘ডিগবাজি’ নামে প্রথম টেলিভিশন নাটক পরিচালনা করেছিলাম। শুটিং হয়েছিল লন্ডনে। এরপর আমার লেখায় ‘মেঘেদের সংসার’ শিরোনামে নতুন একটি ধারাবাহিক নাটক পরিচালনা করেছি। ‘লাশ’ নামের একটি নাটকও পরিচালনা করেছি। আর সম্প্রতি আমার নিজের লেখায় ‘বদরাগী বদরুল’ খ-নাটকে অভিনয় করেছি।’ আর ড. এজাজ ছোট পর্দার জন্য করছেন স্বাস্থ্যবিষয়ক মজার অনুষ্ঠান ‘স্বাস্থ্য মামা’।

এটি তারই গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় নির্মিত। প্রাণবন্ত আড্ডা একসময় সমাপনের পথে। এবার বিদায়ের পালা। যেতে যেতে দুজনই একসঙ্গে বলে উঠলেন-আমরা দুজনই কিন্তু হুমায়ূন স্যারের আবিষ্কার...বলতে বলতে কিছুটা বিষাদের ছায়া পড়ল তাদের চোখে-মুখে। এই বিষাদ অসময়ে গুরুকে হারাবার বিষাদ...!

ফারুক ও ডা. এজাজের সঙ্গে শোবিজের আড্ডা

সর্বশেষ খবর