শিরোনাম
শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জয়ে শুরু জয়ে শেষ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জয়ে শুরু জয়ে শেষ

জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার পর আনন্দে আত্মহারা টাইগাররা -ফাইল ফটো

পানিয়াঙ্গারা তখনো সাজঘরে পা রাখেননি। তার আগেই জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যান মুঝারাবানিকে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা স্বাগত জানান স্লিপে পাঁচ ও গ্যালিতে তিন ফিল্ডার রেখে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে এমনটির দেখা মিলেছিল একবার। নব্বই দশকে দামাল স্মৃতি ক্রিকেটের ফাইনালে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথম। এই প্রথম বাংলাদেশকে এতটা আগ্রাসী মনোভাবে দেখা গেল। হঠাৎ করে এমন আগ্রাসী মেজাজে বাংলাদেশকে দেখার কারণ খুঁজতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি। ২০১৫ সালের ওয়ানডে ক্রিকেটের পারফরম্যান্সই আত্মবিশ্বাসী করেছে মাশরাফিদের। আত্মবিশ্বাসের রসদ না জোগানোর কোনো  কারণও নেই। সব মিলিয়ে ২০১৫ সালে ১৮ ওয়ানডেতে অংশ নিয়ে ১৩টি জিতেছে। জয়গুলো এসেছে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাক্রমশালী দলগুলোর বিপক্ষে। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বছর পার করল টাইগাররা জয় দিয়ে। বছরটা শুরুও করেছিল জয় দিয়ে।

২০১৪ সালে হারতে হারতে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে আইসিসি সহযোগী দেশ আফগানিস্তানের কাছে হেরে লজ্জায় পড়ে যায় টাইগাররা। সেই ধাক্কা সামলে উঠার আগে ফের হারের লজ্জা পায় হংকংয়ের কাছে। সাবেক ব্রিটিশ কলোনির কাছে হেরে যায় টি-২০ বিশ্বকাপে। পারফরম্যান্সের গ্রাফ যখন তলানিতে হাঁটছিল, তখনই অসাধারণ এক সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। টেস্ট ও ওয়ানডের দুই ফরম্যাটে দুই অধিনায়ক তত্ব চালু করে। টেস্টে মুশফিককে অধিনায়ক রেখে ওয়ানডেতে নতুন করে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মাশরাফির হাতে। এরপর সবকিছু ভোজবাজির মতো পাল্টে যায়। গত নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে দিয়ে শুরু হয় যাত্রা। ২০১৫ সাল শেষ করে জিম্বাবুয়ে দিয়ে।

অবশ্য বছর শুরু হয় বিশ্বকাপ ক্রিকেট দিয়ে। ক্রিকেট মহাযজ্ঞে মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশ যাত্রা করে আফগানিস্তানকে হারিয়ে। এরপর বিশ্বকাপে একে একে হারায় স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডকে। ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। হেরে যায় শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড ও ভারতের কাছে। তিন জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। কোয়ার্টারের লড়াইয়ে দুই আম্পায়ারের পক্ষপাতিত্ব আম্পায়ারিংয়ে বিদায় নেয় বিশ্বকাপ থেকে। সেমিতে খেলতে না পারলেও বিশ্বকাপে ভালো খেলার আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঘরের মাটিতে এ বছর প্রথম মুখোমুখি হয় পাকিস্তানের। দীর্ঘ ১৬ বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে পাকিস্তানকে শুধু হারের স্বাদ দেননি মাশরাফিরা, হোয়াইটওয়াশ করেন। পাকিস্তানকে হারানোর পর মুখোমুখি হয় ভারতের। ভারতকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর পর একই ব্যবধানে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তিন পরাক্রমশালী দলকে হারানোয় পয়েন্ট নিয়ে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এবার হোয়াইটওয়াশ করে জিম্বাবুয়েকে। সব মিলিয়ে ঘরের মাটিতে টানা পাঁচ সিরিজ জেতার রেকর্ড গড়ে এবং চারটিই ২০১৫ সালে। এ বছরের টাইগারদের পারফরম্যান্স বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার পর।

২০১৫ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেট

দল            ম্যাচ      জয়      হার

ভারত           ৪         ২        ২

দক্ষিণ আফ্রিকা   ৩         ২        ১

জিম্বাবুয়ে         ৩        ৩        ০

পাকিস্তান         ৩        ৩        ০

শ্রীলঙ্কা            ১        ০        ১

নিউজিল্যান্ড      ১        ০        ১

স্কটল্যান্ড         ১        ১        ০

আফগানিস্তান    ১        ১        ০

ইংল্যান্ড          ১        ১        ০

--------------------------------------

মোট            ১৮       ১৩       ৫

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর